দিনের পর দিন ক্রমশই বাড়ছে গুজবের জেরে গণপিটুনির ঘটনা৷ রাজ্যের এহেন পরিস্থিতিতে উদ্বিগ্ন মুখ্যমন্ত্রী৷ আজ শুক্রবার তারকেশ্বরে মাটি উৎসবের উদ্বোধনে গিয়ে এই ইস্যুতে সুর চড়ালেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ বিজেপি-আরএসএসের ইন্ধনে অশান্তির আবহ তৈরি হচ্ছে বলে অভিযোগ করলেন তিনি।
রানি রাসমণি গ্রিন ইউনিভার্সিটি ও মাটি উৎসবের সূচনায় হুগলির তারকেশ্বরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘নির্বাচন এগিয়ে এলেই বিজেপি তৎপর হয়ে ওঠে। কিন্তু এই বাংলায় কোনওভাবেই দাঙ্গা লাগতে দেব না’। বিজেপি এবং আরএসএসের বিরুদ্ধে তোপ দেগে মমতা বলেন, ‘গেরুয়াবসনের অমর্যাদা করছে অনেকে৷ হাতে ঝান্ডা নিয়ে রাতে রাস্তায় বেরিয়ে পড়ছে৷ গুজব ছড়াচ্ছে৷ আর তাতেই অশান্তি লাগছে৷ হিন্দু, মুসলমানে কোনও ভেদাভেদ নেই৷ সকলের রক্তের রং এক৷ ভাষা এক৷ চাইলেই বিভেদ করতে দেব না’৷ কেন্দ্রের বিরুদ্ধে তোপ দেগে বলেন, ‘হিংসা ও বিভেদ উসকে দিয়ে ক্ষমতায় আসার চেষ্টা করছে বিজেপি। যারা মানুষ খুন করে তারা কোনও ধর্মের পালন করে না। ধর্মের নামে দেশকে লণ্ডভণ্ড করার রাজনীতি করা হচ্ছে’। বিজেপিকে কটাক্ষ করে বলেন, ‘কপালে গেরুয়া ফেট্টি বেঁধে আর তিলক লাগিয়ে ধর্ম পালন হয় না’।
গুজবের জেরে গণপিটুনির ঘটনা রুখতে সচেতনতামূলক প্রচারে জোর দিয়েছে পুলিশ৷ মাটি উৎসবের মঞ্চ থেকে আরও একবার সাধারণ মানুষের উদ্দেশে সচেতনতার বার্তা দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘সন্দেহজনক কাউকে এলাকায় ঘোরাফেরা করতে দেখলে পুলিশে খবর দিন৷ আইন নিজের হাতে তুলে নেবেন না’৷
এদিন আয়ুষ্মান ভারত-সহ একাধিক ইস্যুতেই এদিন কেন্দ্রের বিরুদ্ধে সুর চড়ান মু্খ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷ রাজ্যবাসীর চিকিৎসার জন্য আয়ুষ্মান ভারত প্রকল্পের কোনও প্রয়োজনীয়তা নেই বলে স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দেন তিনি। তার পরিবর্তে স্বাস্থ্যসাথী প্রকল্পের সুযোগ সুবিধার কথা মঞ্চ থেকে তুলে ধরেন মমতা। সিঙ্গুরের জমি আন্দোলনের প্রসঙ্গ তুলে ধরে কৃষকদের সবসময় পাশে থাকার আশ্বাস দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ চলতি বছর তারকেশ্বরে প্রচুর পরিমাণ আলু উৎপাদন হয়েছে৷ কৃষকদের থেকে ১০ লক্ষ মেট্রিক টন আলু রাজ্য সরকার কিনে নেবে বলেও ঘোষণা করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ হুগলি জেলার আর্থিক উন্নতিতে পর্যটনের দিকে রাজ্যের তরফে বিশেষ নজর দেওয়া হয়েছে৷ ঢেলে সাজানো হচ্ছে ওই জেলার মন্দির, রাস্তাঘাট৷ রাজা রামমোহন রায়ের জন্মভিটে সংস্কারের উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্য৷