আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে ঢাকা-কলকাতার সাথে জড়িয়ে যাচ্ছে করাচি। বাংলাদেশের ঢাকায় ভাষা দিবসের অনুষ্ঠানের কথা পুরো বিশ্ব জানে। পাকিস্তানেও যে বাংলা পড়ানো হয় সেটা সত্যি হয়তো অনেকেরই জানা নেই। ভাষাদিবস উপলক্ষে বৃহস্পতিবার করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগে আলোচনা হবে ভাষা আন্দোলন নিয়ে। বুধবার আনন্দবাজারকে এ কথা জানালেন বিভাগের চেয়ারম্যান, অধ্যাপক মহম্মদ আবু তাইয়ব খান। করাচি বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগাযোগ করা হলে অধ্যাপক তাইয়ব প্রথমে হিন্দিতে কথা শুরু করলেও ‘কলকাতা’ শুনেই বললেন, ‘‘বলুন, কেমন আছেন?’’
১৯৫১ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় করাচি বিশ্ববিদ্যালয়। ১৯৫৩ সাল থেকেই শুরু হয়েছিল বাংলা বিভাগের পথ চলা। তাইয়ব জানালেন, “এখন স্নাতক ও স্নাতকোত্তর মিলিয়ে বিভাগের পড়ুয়া জনা তিরিশ। আগে চার জন শিক্ষক থাকলেও এক জনের অবসরের পর এখন তিন জন। তবে এর মধ্যেও এমফিল-পিএইচডি’র মতো গবেষণা যাতে শুরু করা যায় তার চেষ্টা চলছে। স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ছাড়াও শুধু বাংলা লিখতে ও বলতে পারার জন্য তাঁদের সার্টিফিকেট কোর্সও রয়েছে। বাংলাদেশ থেকে শিক্ষকদের যাতায়াত রয়েছে বিভাগে”।
রবীন্দ্রনাথ-বিবেকানন্দ-বিদ্যাসাগর-শরৎচন্দ্রের পাশাপাশি করাচির পাঠ্যক্রমে বুদ্ধদেব বসুও রয়েছেন বলে জানিয়েছেন তাইয়ব। কিন্তু বাংলা ভাষাকে ইদানীং যে কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে হচ্ছে, তা পাকিস্তানে থেকে কতটা অনুভব করছেন তাঁরা? তাইয়ব অবশ্য বাংলাকে অন্য কোনও ভাষার থেকে আলাদা করতে নারাজ। তাঁর যুক্তি, ‘‘যে কোনও ভাষা শিখতে সময় লাগে। সে বাংলা হোক বা উর্দু। কিন্তু এখন সকলেই দ্রুত কাজ পেতে চায়। তাই সাহিত্য পড়ার আগ্রহ কমছে। তবে তার মধ্যেও এখানে যাঁরা বাংলা পড়ছেন, তাঁদের আমি ধন্যবাদ জানাতে চাই।’’
১৯৭১ সালে স্বাধীন বাংলাদেশ গঠনের পরে সাবেক পশ্চিম পাকিস্তান থেকে অনেক বাংলাভাষী বাংলাদেশে চলে যান। পাকিস্তানের বাংলাভাষী জনসংখ্যার বেশিরভাগ মানুষ করাচিতে বাস করেন।পাকিস্তানি বাঙালি বিষয়ক কমিটির তথ্য অনুযায়ী, পাকিস্তানে বাংলাভাষীদের শ’দুয়েক জনবসতি আছে। এর মধ্যে ১৩২টিই করাচিতে। করাচির সেই সব মহল্লায় দেখা মেলে বাংলা ইনবোর্ডের।