এবার তাঁর দেওয়া প্রতিশ্রুতি মতো বিধায়ক সুজিত বসু লেক টাউন মিলন সঙ্ঘের মাঠের নামকরণ করলেন পদ্মশ্রী প্রদীপকুমার বন্দ্যোপাধ্যায় ক্রীড়াঙ্গন। বুধবার সন্ধেয় যে মঞ্চে বসে স্বয়ং প্রদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় ইলেকট্রনিক বোতাম টিপে নিজের নামের স্টেডিয়াম উদ্বোধন করলেন, তা অভিনব। তবে মঞ্চে বসে অসুস্থ বোধ করায় কোনও রকমে উদ্বোধন পর্বের শেষেই তাঁকে গাড়িতে উঠিয়ে দেওয়া হয়।
৮০ পেরিয়ে গেছেন আগেই। আগামী ২৩ জুন আরও একটি জন্মদিন আসছে। তার আগে আত্মজীবনী প্রকাশ হয়েছে। নিজের নামের ক্রীড়াঙ্গন উদ্বোধন করে গেলেন নিজেই। বাড়ি ফেরার পথে, টেলিফোনে জানতে চেয়েছিলাম, কেমন আছেন? উত্তরে সবার প্রিয় পিকে জানালেন, ‘বেশিক্ষণ বসে থাকতে পারি না এখন। কিন্তু, ইস্টার্ন রেলের হয়ে খেলা এক ফুটবলারকে সম্মান জানানো হল, এ এক বিরাট পাওনা। আমি আপ্লুত, অত্যন্ত সম্মানিত বোধ করছি।’
তিনি কে? কত বড় ফুটবলার ছিলেন, কত বড় কোচ ছিলেন, কত বড় বিশেষজ্ঞ হিসেবে সংবাদ মাধ্যমে বক্তব্য রাখেন, তা শুরুতে বিস্তারিত ভাবে বলে গেলেন বিশিষ্ট সাংবাদিক মানস চক্রবর্তী। তারপর সুজিত বসু জানালেন, কেন তাঁর এলাকার একটি মাঠকে ‘প্রদীপদা’র নামে উৎসর্গ করলেন। মঞ্চ জুড়ে তখন ভাস্কর গঙ্গোপাধ্যায়, সমরেশ চৌধুরি, মিহির বসু, গৌতম সরকার, সম্বরণ বন্দ্যোপাধ্যায়-সহ একঝাঁক রাজনৈতিক নেতা এবং ফুটবলপ্রেমী।
ওই মঞ্চে দাঁড়িয়েই সুজিত বসু ঘোষণা করলেন, ‘এরপর আমি সৌরভ গাঙ্গুলির নামে একটি স্টেডিয়াম করব। এই মর্মে সৌরভকে কথা দিয়েছি অনেকদিন আগেই। এবার তা বাস্তবায়িত করার পালা। প্রদীপদার নামে স্টেডিয়াম করে ফেললাম। এবার সৌরভের জন্য উদ্যোগ নিতে হবে।’
চমৎকার করে সাজানো হয়েছিল মঞ্চটি। মাঠে ঢোকার মুখে আধুনিক তোরণ যেখানে, সেখানে পিকে বন্দ্যোপাধ্যায় নাম। গেটে ঢোকার মুখে কালো গ্রানাইট পাথরে সোনালি অক্ষরে লেখা এই ক্রীড়াঙ্গন উদ্বোধনের ফলক। যা দেখে পিকে-র দুই কন্যা পলা ও পিক্সি-সহ উপস্থিত এ যুগের সব ফুটবলার প্রশংসায় ভরিয়ে দেন। মিলন সঙ্ঘের খুদে ফুটবলাররা ফুল দিয়ে একে একে পায়ে হাত দিয়ে পিকের আশীর্বাদ নেয়।
এর আগেই অবশ্য সুজিত পুষ্পস্তবক, লাল গোলাপের মালা, পেল্লাই আকৃতির ফলের ঝুড়ি, মিষ্টি, একটি ব্লেজার এবং সুব্রত গঙ্গোপাধ্যায়ের আঁকা একটি দুর্দান্ত পিকে-র প্রতিকৃতি তুলে দিলেন তাঁর হাতে। অনুষ্ঠানের শেষে শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাবে মহিলাদের সঙ্গে একটি প্রীতি ম্যাচে অংশগ্রহণ করলেন চিত্তরঞ্জনের মহিলা রয়্যাল বেঙ্গল চ্যালেঞ্জার্স। যাতে ১-০ গোলে জিতে যায় শ্রীভূমি ফুটবল ক্লাব।