পুলওয়ামায় জঙ্গী হানার পর দেশের বিভিন্ন জায়গায় কাশ্মীরিদের ওপর হামলা হলেও মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাংলায় সুরক্ষিত আছেন তাঁরা। এমনকি খোদ কাশ্মীরিরাই এ কথা একবাক্যে স্বীকার করছেন যে, গোটা দেশের মধ্যে মমতার বাংলাই সবচেয়ে শান্ত এবং নিরাপদ আশ্রয়।
নদিয়ার তাহেরপুরে গত দশ বছর ধরে শাল বিক্রির সূত্রে যাতায়াত জম্মু-কাশ্মীরের বদগামের বাসিন্দা জাভেদ আহমেদ খানের। সেখানে একটি দোকানঘর ও ভাড়াবাড়িও রয়েছে তাঁদের। এলাকার বহু মানুষের সঙ্গে চেনাশোনা, বন্ধুত্ব থাকায় কোনও দিনও নিরাপত্তার অভাব বোধ করেননি জাভেদ। তবে সোমবার রাত ন’টা নাগাদ মারমুখী কিছু লোক ১৭ নম্বর রাস্তার ধারে তাঁদের ওই ভাড়াবাড়িতে হামলা চালায়। কিন্তু মমতার প্রশাসন এর বিরুদ্ধে কড়া ব্যবস্থা নেওয়ায় আশ্বস্ত জাভেদ জানিয়েছেন, ‘জানি মুষ্টিমেয় কিছু লোক বিদ্বেষ ছড়াতে এ সব করছে। কিন্তু এতে ভয় পাব না। বাংলার মানুষের ওপরে পূর্ণ আস্থা রয়েছে আমাদের।’
প্রসঙ্গত, জাভেদের ওপরে যখন হামলা হয়, তখন এলাকারই কিছু লোক পুলিশকে জানিয়েছিলেন। ঘণ্টাখেনক পরে পুলিশ এসে উদ্ধার করে জাভেদ আর তাঁর তুতো ভাই মেহরাজউদ্দিনকে। তাঁদের আপাতত একটি নিরাপদ জায়গায় রাখা হয়েছে। ইতিমধ্যে গ্রেফতারও করা হয়েছে এক জনকে, যদিও পুলিশ তার পরিচয় জানাতে চায়নি। বাকিদের সন্ধান চলছে বলে জানিয়েছেন নদিয়ার পুলিশ সুপার রূপেশ কুমার। এরপরই বাংলার মুখ্যমন্ত্রীর ওপরে আস্থা রেখে ভাঙা ভাঙা হিন্দিতে জাভেদ বলেন, ‘এত দিন এখানে ব্যবসা করছি আমরা। এখানকার মানুষের এত ভালবাসা পেয়েছি। যারা এসেছিল তারা আমার পরিচিত নয়। ভয় পেয়ে চলে যাওয়ার প্রশ্নই নেই।’
এই আস্থাই দেশপ্রেমিকের ভেকধারীদের রুখে দেওয়ার অন্যতম অস্ত্র বলে মনে করছেন শান্তিকামী নাগরিকেরা। পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলার পর থেকে দেশের বিভিন্ন অংশে বিভিন্ন প্রান্তে কাশ্মীরিদের উপরে হামলা চালাচ্ছে কিছু মানুষ। তবে বাংলায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এই বিদ্বেষ রুখতে কড়া বার্তা দিয়েছেন। তৎপরতার সঙ্গে পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার জন্য গতকালই টুইট করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে ধন্যবাদ জানিয়েছেন কাশ্মীরের প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমর আবদুল্লা। মমতার প্রশংসায় তিনি বলেছেন, ‘বাংলায় কাশ্মীরি যুবকের উপর হামলার ঘটনায় দিদির সরকার দ্রুত ব্যবস্থা নিয়েছে। আমি তাঁর প্রতি কৃতজ্ঞ।’