কাশ্মীরের পুলওয়ামা জঙ্গী হামলার পর গোপন সূত্রে খবর পেয়ে পিঙ্গলান অঞ্চলে যৌথ তল্লাশি অভিযান চালায় ভারতীয় সেনাবাহিনীর ৫৫ রাষ্ট্রীয় রাইফেলস, সেন্ট্রাল রিজার্ভ পুলিশ ফোর্স (সিআরপিএফ) এবং জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশের স্পেশ্যাল অপারেশন গ্রুপ (এসওজি)। সেই সময়ই জঙ্গীদের সঙ্গে গুলির লড়াইয়ে শহীদ হন ভারতীয় জওয়ান অজয় কুমার। গতকাল ছিল সেই শহীদ জওয়ানের শেষকৃত্য। তাঁর অন্ত্যেষ্টিতে গিয়েছিলেন কেন্দ্রীয় মন্ত্রী সত্যপাল সিং, উত্তরপ্রদেশের মন্ত্রী সিদ্ধার্থনাথ সিং এবং মেরঠের বিজেপি বিধায়ক রাজেন্দ্র আগরওয়াল। কিন্তু সেখানে অসংবেদশীল আচরণ করার অভিযোগ উঠল এই বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, শহীদ জওয়ান অজয় কুমারের দাহকার্যের জায়গায় তিন বিজেপি নেতাকেই জুতো পরে বসে থাকতে দেখা যায়। যা দেখে বেশ ক্ষুব্ধ হন শহীদ অজয়ের পরিবার। অনেকেই এই দৃশ্য মোবাইলে ভিডিও করেন। সেই সময়কার একটি ভিডিও ক্লিপ ভাইরাল হয়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। তাতে দেখা যায়, মৃতের পরিবারের এক ব্যক্তি চিৎকার করে তাঁদের বলছেন, আপনাদের কান্ডজ্ঞান থাকা উচিত। এরপরই ওই তিন নেতাকে হাতজোড় করে ক্ষমা চাইতে দেখা যায় পরিবারের কাছে। এবং বাধ্য হয়ে তাঁরা জুতো খুলে বসেন। আবার সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া অপর একটি ভিডিও ক্লিপে দেখা যায়, রাজেন্দ্র আগরওয়াল এবং সত্যপাল সিং অন্ত্যেষ্টির সময় একে–অপরের সঙ্গে খোশ গল্প করছেন এবং হাসাহাসি করছেন। যা নিয়ে ওই দুই নেতাকে কটাক্ষ করা হয় সোশ্যাল মিডিয়ায়।
সোমবার পুলওয়ামায় জঙ্গীদের খতম করতে গিয়ে শহীদ হন অজয় কুমার-সহ তিনজন সেনা। ২৭ বছরের অজয় পশ্চিম উত্তরপ্রদেশের মেরঠ জেলার বাসসি টিকরি গ্রামের বাসিন্দা ছিলেন। অজয় কুমার ২০১১ সালে সি আর পি এফের চাকরি করেন। বিবাহ করেন ২০১৫ সালে। তাঁর একটি দু’বছরের শিশুপুত্র আছে। অজয় কুমারের বাবাও সেনায় চাকরি করতেন বলে জানা গেছে। অজয় কুমার যে অভিযানে গিয়ে শহীদ হন, তাতে পুলওয়ামা হানার মূল চক্রী নিহত হয়েছিল। তার নাম কামরান। সে জইশ-ই-মহম্মদের প্রধান মৌলানা মাসুদ আজহারের ঘনিষ্ঠ ছিল বলে জানা যায়। কামরান ও তার দলবলের সঙ্গে এনকাউন্টার চলে ১২ ঘণ্টা ধরে। পুলওয়ামায় আত্মঘাতী বিস্ফোরণ যেখানে হয়েছিল, তার থেকে ১০ কিলোমিটার দূরে ওই সংঘর্ষ হয়েছিল।