‘ভারত যদি হামলা করে, পাল্টা হামলা চালাতে প্রস্তুত পাকিস্তানও।’ পুলওয়ামায় আত্মঘাতী হানার পর কাশ্মীর নিয়ে চলা উত্তেজনার মাঝে এবার এমনই মন্তব্য করলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে খোঁচা দিয়ে সরাসরি চ্যালেঞ্জের সুরে ইমরান বললেন, এই হামলায় ভারত পাক যোগের প্রমাণ দিতে পারলে উপযুক্ত ব্যবস্থা নেবেন তিনি। একই সঙ্গে তাঁর হুঙ্কার, পাকিস্তানের ওপরে হামলা হলে তার জবাবও পাবে ভারত।
সৌদি যুবরাজ মহম্মদ বিন সলমনের পাকিস্তান সফর নিয়ে ব্যস্ত থাকাতেই ‘আগে প্রতিক্রিয়া দেওয়া হয়নি’ বলে জানিয়েছেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তবে প্রথম প্রতিক্রিয়াতে স্বাভাবিক ভাবেই তাঁদের দিকে ওঠা অভিযোগ খারিজ করেছেন ইমরান। এদিন তিনি বলেন, ‘কাশ্মীর হামলায় পাকিস্তান কোনওভাবে জড়িত, বা পাক মাটি ব্যবহার করে এই হামলার ষড়যন্ত্র হয়েছে, তার প্রমাণ দিক ভারত। আমি গ্যারান্টি দিচ্ছি, উপযুক্ত প্রমাণ দিতে পারলে ব্যবস্থা নেবই। কোনও চাপ থেকে এমন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছি না। আমি এ কথা বলছি কারণ, গোটা বিশ্বে সন্ত্রাসবাদের জেরে সব থেকে ক্ষতিগ্রস্ত দেশের নাম পাকিস্তান। আমাদের দেশের সত্তর হাজার মানুষ সন্ত্রাসের বলি হয়েছেন।’
পুলওয়ামায় জঙ্গী হামলায় পাকিস্তান যোগ কার্যত স্পষ্ট। পাকিস্তানের মদত পুষ্ট জইশ জঙ্গীরা হামলা চালিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে সেই তথ্যপ্রমাণও উঠে এসেছে। তাই পাকিস্তানের ওপর চাপ ক্রমেই বাড়ছে। তবে সন্ত্রাসবাদের জন্য পাকিস্তানের বিপুল ক্ষতি হয়েছে দাবি করে এদিন আলোচনার কথা বলেন পাক প্রধানমন্ত্রী। তাঁর কথায়, ‘আমরা যে কোনও আলোচনার জন্য প্রস্তুত।’। কাশ্মীরের পাশাপাশি ভারত যদি ‘সন্ত্রাস নিয়ে আলোচনা’করতে চায়, তাতেও তিনি রাজি বলে জানিয়েছেন। এরপর কাশ্মীর নিয়ে ভারতকে খোঁচা দিয়ে ইমরান বলেন, ‘ভারতের এবার নতুন কিছু চিন্তাভাবনা করার সময় এসেছে। কাশ্মীরী যুবকদের মধ্যে থেকে কেন মৃত্যুভয় চলে যাচ্ছে, তা ভেবে দেখুক ভারত।’
পুলওয়ামা হামলার পরেই পাকিস্তানের বিরুদ্ধে বদলা নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে গোটা ভারতে। বিভিন্ন মহল থেকে ‘বদলা’র যে দাবি উঠছে, তা সম্পর্কে তিনি অবহিত বলে জানিয়ে পাল্টা হুমকি দেন পাক প্রধানমন্ত্রী। ইমরান বলেন, ‘ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম এবং রাজনৈতিক নেতাদের মুখে শোনা যাচ্ছে ভারত হামলা চালাতে পারে। একটা কথা জানিয়ে রাখি, ভারত যদি পাকিস্তানের ওপর কোনওরকম হামলা চালায়, তা হলে পাকিস্তান তার জবাব দেওয়ার কথা ভাববে না, সরাসরি জবাব দেবে। আর তখন পরিস্থিতি সবার হাতের বাইরে চলে যেতে পারে। যুদ্ধ শুরু করা আমাদের হাতে, কিন্তু এর শেষটা আমাদের হাতে থাকে না।’