বিজেপির মিথ্যের মুখোশ খুলে দিয়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় উন্নয়নকে তুলে ধরে ভোটারদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে প্রচার চালাতে হবে। আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে এভাবেই এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে দলের নেতা, কর্মীদের নির্দেশ দিলেন তৃণমূলের উত্তর ২৪ পরগনা জেলার সভাপতি তথা খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক। রবিবার জ্যোতিপ্রিয় বলেন, ‘নির্বাচনের প্রাক্কালে এই জেলায় বিজেপি নেতারা যেখানেই সভা করে মানুষকে প্রভাবিত করার চেষ্টা করবেন, তার দু’একদিনের মধ্যেই আমরা সেই সভার পাল্টা সভা করে মানুষকে বোঝাব। বিজেপির মুখ এবং মুখোশ খুলে দেব।’
দোরগোড়ায় লোকসভা নির্বাচন। আর সেই নির্বাচনকে সামনে রেখে এখন থেকেই প্রস্তুতি শুরু করল জেলা তৃণমূল। রবিবার সকাল থেকে গোবরডাঙা পুরসভার মিটিং রুমে জ্যোতিপ্রিয় মল্লিকের উপস্থিতিতে দলীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সেখানে অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন আরেক মন্ত্রী তাপস রায়, বিধানসভার মুখ্য সচেতক নির্মল ঘোষ, বিধানসভার পরিষদীয় সচিব পার্থ ভৌমিক, বনগাঁর সাংসদ মমতাবালা ঠাকুর-সহ একাধিক বিধায়ক এবং জেলার অন্যান্য নেতৃত্ব।
গতকাল আসন্ন লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভার অর্ন্তগত বাগদা, বনগাঁ উত্তর ও দক্ষিণ, গাইঘাটা এবং স্বরূপনগর— এই পাঁচ বিধানসভা কেন্দ্রের নির্বাচন পরিচালন কমিটি গঠন করা হয়। সেখানে সংশ্লিষ্ট বিধানসভার দলের বর্তমান বিধায়ককে চেয়ারম্যান করে এই কমিটি গঠন করা হয়েছে। তাঁর নেতৃত্বেই এই কমিটি বাকি সদস্যদের নির্বাচিত করবে। পরবর্তী সময়ে এই কমিটিই বুথ স্তরের কমিটি গঠন করে নির্বাচনী প্রচারের যাবতীয় কাজ শুরু করবে।
রবিবারের বৈঠকে জেলা সভাপতি দলের সকলকে নির্দেশ দেন, কোনও এলাকায় যদি নিজেদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝি থাকে, তা হলে তা দ্রুত মিটিয়ে নিয়ে একসঙ্গে নির্বাচনী কাজে লেগে যেতে হবে। কোনও নেতাসুলভ দাম্ভিকতা রাখা চলবে না। সব স্তরের নেতা, কর্মীদের প্রাধান্য দিয়ে কাজ করতে হবে। পুরনো কর্মীদের ক্ষেত্রে বিশেষে প্রাধান্য দিয়ে তাঁদের নির্বাচনী কাজে লাগাতে হবে। ‘কথা কম, কাজ বেশি’ —এই ফর্মুলায় প্রচারের কাজ করতে হবে।
সেইসঙ্গে কেন্দ্রের বিজেপি সরকারের গত ৫ বছরের মিথ্যা প্রতিশ্রুতির মুখোশ খুলে দিয়ে, তাদের মতো একটি সাম্প্রদায়িক দলের নানা ব্যর্থতার দিক মানুষের সামনে তুলে ধরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জনমুখী উন্নয়নের কথা আরও বেশি করে ভোটারদের কাছে প্রচার করতে হবে। কে প্রার্থী, তা বিচার না করে রাজ্য সরকারের উন্নয়নকে সামনে রেখে মমতা ব্যানার্জির মুখ এবং দলীয় প্রতীকে ভোট হবে। আর সেভাবেই ভোটারদের মন জয় করতে হবে। উল্লেখ্য, বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্রের অর্ন্তগত ৭টি বিধানসভার মধ্যে বাগদা বিধানসভা বাদ দিয়ে ৬টি তৃণমূলের দখলে।
অন্যদিকে, এবারের পঞ্চায়েত নির্বাচনে এই বাগদাতেই অধিকাংশ গ্রাম পঞ্চায়েত এবং বাগদা পঞ্চায়েত সমিতি তৃণমূলের দখলে এসেছে। ফলে এবারের লোকসভা নির্বাচনে বাগদা বিধানসভা এলাকায় দলের ফল আগের থেকে ভাল হবে বলে দলের আশা। গত লোকসভা নির্বাচনে বনগাঁ লোকসভা কেন্দ্র থেকে ২ লক্ষ ১৩ হাজারের কাছাকাছি ভোটে জয়ী হয়েছিলেন বড়মা বীণাপাণি ঠাকুরের বড় বউমা, তৃণমূলের মমতাবালা ঠাকুর। এবারের লোকসভা নির্বাচনে সেই ব্যবধান আরও বাড়িয়ে জয় আরও বেশি করে নিশ্চিত করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়েছে তৃণমূল। দলীয় সূত্রে জানা গেছে, এবারেও এই কেন্দ্রে তৃণমূলের প্রার্থী হিসেবে মমতাবালাকেই দাঁড় করানো হতে পারে।