কাশ্মীর উপত্যকার অসামরিক সাধারণ মানুষের থেকে বিচ্ছিন্ন না হয়ে, তাঁদের সঙ্গে মিলেমিশেই থাকতে চেয়েছিলেন তাঁরা। আর সেজন্যই সিআরপিএফের কর্তারা সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন, জাতীয় সড়কে কনভয় চলাকালীন স্থানীয় যানবাহনের চলাচল বন্ধ করা হবে না। কোনও পৃথক নিরাপত্তা নয়। স্থানীয় যানবাহনও চলবে কনভয়ের মধ্যে। আর সেটাই কাল হয়ে দাঁড়াল। বৃহস্পতিবার দুপুরে জম্মু-শ্রীনগর জাতীয় সড়কের ওপরে যে আত্মঘাতী হামলা হল, তার অন্যতম কারণ হিসেবে এই নমনীয়তাকেই দায়ী করলেন উপত্যকায় নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা সিআরপিএফ কর্তারা।
শুক্রবার ফোনে আধা সামরিক বাহিনীর এক কর্তা বলেন, বাসিন্দাদের বোঝাতে চেয়েছিলাম, বিচ্ছিন্নভাবে থেকে কোনও লাভ নেই। তাই অন্যান্য উদ্যোগের পাশাপাশি কনভয়ের সঙ্গে সাধারণ মানুষের গাড়ি চলাচলের অনুমতি দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু এভাবে যে ছুরি খেতে হবে, তা বোঝা যায়নি। সেকারণেই নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে, বাসিন্দাদের সঙ্গে যোগসাজস করেই কনভয়ে হামলা হয়েছে। তবে এই ঘটনা থেকে শিক্ষা নিয়ে আধা সেনা কনভয়ে যে নমনীয়তা নেওয়া হয়েছিল, তা বাতিল করতে চলেছে সিআরপিএফ। বাহিনীর কর্তাদের কথায়, এবার থেকে পর্যাপ্ত রোড স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়ার সঙ্গেই কনভয় এগিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে। কোনও সাধারণ গাড়ি যাতে না ঢুকতে পারে, তাও কড়াভাবে নজর রাখা হবে।
অন্যদিকে, জঙ্গী হামলার পরেই দেশের সবমহলেই প্রশ্ন উঠছে যে, পর্যাপ্ত নিরাপত্তা এবং সতর্কতা ছাড়াই কি জম্মু থেকে ৭৮ বাসে প্রায় আড়াই হাজার সিআরপিএফ জওয়ান রওনা হয়েছিলেন কাশ্মীরের উদ্দেশ্যে? কেন কনভয়ের আগে পর্যাপ্ত রোড স্যানিটাইজেশন প্রক্রিয়া ছিল না? কী করে রাস্তার পাশে দিন দুপুরে বিস্ফোরক বোঝাই গাড়ি অপেক্ষা করল কনভয়ের জন্য অথচ ওই হাইওয়ের নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা কোনও বাহিনীর চোখে পড়ল না?
উল্লেখ্য, ইন্টেলিজেন্স ব্রাঞ্চের গোয়েন্দারা জানিয়েছে, কাশ্মীর পুলিশের তরফে ফেব্রুয়ারির ৮ তারিখই তাঁদের গোয়েন্দা শাখা সতর্ক করেছিল সম্ভাব্য আইইডি হামলার বিষয়ে। সেই সতর্কবার্তা অগ্রাহ্য না করলে হয়ত এত বড় ক্ষতি এড়ানো সম্ভব হত। সবমিলিয়ে বৃহস্পতিবারের ঘটনার পর দেখা যাচ্ছে, অনেকাংশেই খামতি রয়েছে। জাতীয় সড়কে মোতায়েন রোজ ওপেনিং পার্টি রাস্তা এবং তার পাশে প্রতিটি ইঞ্চি যেমনভাবে খুঁটিয়ে পরীক্ষা করা প্রয়োজন ছিল, তাতেই মনে করা হচ্ছে খামতি ছিল।