আমেরিকার প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প যে খামখেয়ালি, এই কথা সর্বজন বিদিত। তার প্রমাণ হল আবারও। মেক্সিকো সীমান্তের পাঁচিল তোলার জন্যে পর্যাপ্ত অর্থ না পেয়ে দেশে জরুরী অবস্থা ঘোষণা করলেন ট্রাম্প। উল্লেখ্য, এই প্রাচীর নিয়েই গতবছরের শেষে আমেরিকাতে টানা ৩৫ দিন শাটডাউন চলেছিল।
রাত কাটতেই শুক্রবার সকালে হোয়াইট হাউসের রোজ় গার্ডেনে সাংবাদিকদের সামনে হাজির প্রেসিডেন্ট। ঘোষণা করলেন, মেক্সিকো সীমান্তে প্রাচীর তৈরি বাবদ প্রয়োজনীয় অর্থ আদায় করতে জরুরি অবস্থা জারি করছেন তিনি। এর ফলে কংগ্রেসের অনুমতি ছাড়াই, দেওয়ালের জন্য রফা হওয়া অর্থের পাশাপাশি প্রেসিডেন্ট তাঁর নিজস্ব ক্ষমতাবলে প্রতিরক্ষা খাতে বরাদ্দ ৩৬০ কোটি ডলার দেওয়াল তৈরিতে ব্যবহার করতে পারবেন। অন্য খাতের অর্থও নিতে পারেন।
ট্রাম্পের আশা, জরুরী অবস্থা চলাকালীন প্রেসিডেন্টের বিশেষ ক্ষমতা কাজে লাগিয়ে কংগ্রেসের কাছ থেকে পাঁচিল তোলার অর্থ তিনি আদায় করে নেবেন। সীমান্তে এই পাঁচিলের জন্য তিনি ৮০০ কোটি ডলার ব্যয় করতে পারেন বলে মনে করা হচ্ছে। এমন কারণে জরুরী অবস্থা জারির ঘটনা মার্কিন মুলুকে এই প্রথম। আইনজ্ঞদের অনেকেই মনে করছেন, বিষয়টি ট্রাম্পের পক্ষে এতটা সহজ হবে না। জরুরী কোনও পরিস্থিতি ছাড়া এ ভাবে জরুরী অবস্থা জারি করার সিদ্ধান্ত আদালত ভালো চোখে নাও দেখতে পারে। ঠিক যেমনটা হয়েছিল ভিসা নিষেধাজ্ঞার ক্ষেত্রে।
ট্রাম্পের পদক্ষেপ ‘ক্ষমতার চূড়ান্ত অপব্যবহার’ ও ‘বেআইনি কার্যক্রম’ বলে আক্রমণ করেন ডেমোক্র্যাটরা। হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভসের স্পিকার ন্যান্সি পেলোসি এবং ডেমোক্র্যাট নেতা চার্লস শুমার যৌথ বিবৃতিতে বলেন, ‘‘নিজের প্রতিশ্রুতি ভাঙার মরিয়া চেষ্টায় ট্রাম্প। দেওয়াল তৈরির অর্থ মেক্সিকোর কাছ থেকে আদায় করার কথা বলেছিলেন। কিন্তু ওদের রাজি করাতে পারেননি। এখন করদাতাদের অর্থে এই সব করবেন।’’ পেলোসি বলেন, ‘‘প্রেসিডেন্ট হতাশায় ভুগছেন। আইনের পথে যা পারেননি, এখন সেটাই গায়ের জোরে করছেন।’’ কিন্তু ট্রাম্প তাঁর বক্তব্যে অনড়, ‘‘ডেমোক্র্যাটরা মিথ্যে বলছেন। ওরা বলছে, প্রাচীর কাজের নয়। প্রাচীর ১০০ শতাংশ কাজের। ওতে অনুপ্রবেশ, চোরাচালান রোখা যাবে।’’