কিছুদিন আগেই আগুন লেগেছিল মেট্রোর কামরায়। তারপর থেকে একের পর এক ভোগান্তি লেগেই আছে। কখনও অত্যধিক দেরি তো কখনও কামরার দরজা খুলছে না কখনও বিদ্যুৎ সংযোগের অভাবে টানেলেই দাঁড়িয়ে থাকছে মেট্রো। মেট্রোয় ভোগান্তি এখন নিত্যযাত্রীদের দৈনিক অভ্যাস হয়ে উঠছে। এই পরিস্থিতিতে স্বাভাবিকভাবেই মেট্রো রেলকে নিয়ে বিরূপ প্রতিক্রিয়া তৈরি হচ্ছে। যাত্রী নিরাপত্তা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে। তাই বিভ্রাট এড়াতে মেট্রোয় উঠে যাচ্ছে টাইম টেবিল। এবার থেকে আর পাঁচ, সাত, পনেরো মিনিট অন্তর মেট্রো ছাড়া হবে না। আগের স্টেশনে ছাড়ার সময় দেখে তবেই পরবর্তী ট্রেনের ঘোষণা করা হবে। যদিও প্রশ্ন উঠছে এর ফলে যাত্রীদের ঠিক কতটা সুবিধা হবে?
এতদিন মেট্রো চলত ধরাবাঁধা সময় অনুযায়ী। যাত্রী স্টেশনে ঢুকে ডিসপ্লে বোর্ডে দেখতে পেতেন, কটার সময় পরবর্তী ট্রেন প্ল্যাটফর্মে আসবে। এখন ডিসপ্লে বোর্ড দেখাবে, কতক্ষণ বাদে ট্রেন আসবে। যেমন আপনি এবার স্টেশনে নেমে ডিসপ্লে বোর্ডে আর দেখবেন না যে, ৪টে ১৭ মিনিটে ট্রেন আছে। ট্রেন আসার মিনিট তিনেক আগে জানতে পারবেন ট্রেন ঢুকছে। একইসঙ্গে ঢোকার মুহূর্তে আপনাকে জানাতে কাউন্টডাউন সিস্টেম তো থাকবেই। সেকেন্ডের হিসেব কমতে থাকবে তাতে।
মেট্রোসূত্রে খবর, ইতিমধ্যেই মেট্রোর টাইমটেবিল তুলে দেওয়া নিয়ে একাধিকবার আলোচনা হয়েছে। তার বদলে এই রিয়েল টাইম ইনডিকেটর চালু করার পরিকল্পনা করেছে কর্তৃপক্ষ। এক কর্তার কথায়, চেষ্টা চালানো হচ্ছে দ্রুত নয়া এই পদ্ধতি চালু করার। কিন্তু একটু তো সময় লাগবে। আমাদের সিস্টেমে বদল আনা হচ্ছে। মেট্রোর পক্ষ থেকে আরও জানানো হয়েছে বর্তমান টাইমটেবিল যখন তৈরি হয়েছিল, তখন ৩০০ ট্রিপ ট্রেন চলত। ফলে সেইমতোই তৈরি হয়েছিল সময় সরণি। কিন্তু এখন তা কমিয়ে ২৮৪ ট্রিপ করা হয়েছে। এসপ্ল্যানেডে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর কাজের কারণে ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রিত করা হয়েছে। যেখানে ৩০ কিমি বেগে স্টেশনে ঢুকত ট্রেন এবং বেরিয়ে যেত ৪৫ কিমি বেগে। সেই গতিই এখন ১০ কিমি প্রতি ঘণ্টায় থাকছে। তাছাড়া যাত্রীচাপে দরজা বন্ধ না হওয়া। কোনও স্টেশনে একটু বেশি রেক দাঁড় করানো, যান্ত্রিক সমস্যায় গতি কমে যাওয়ায় দুই ট্রেনের সময়ের ব্যবধান অনেকক্ষেত্রে দুই বা তিন মিনিটের হয়ে দাঁড়ায়। তখনই একটি ট্রেন বাতিল করা হয়। যাত্রীরা টাইম টেবিল দেখে প্ল্যাটফর্মে দাঁড়িয়ে থাকলেও সেই সময় ট্রেন আসে না। অনেক সময় পরিস্থিতি সামাল দিতে দু’তিনটি ট্রেনও বাতিল করা হয়।
মেট্রোয় সময়সূচীর বদলের মাঝেই যদিও ফের গতকাল বিভ্রাট দেখা গিয়েছিল মেট্রোয়। বৃহস্পতিবার সন্ধেয় ময়দান স্টেশনে কবি সুভাষগামী একটি ট্রেনের দরজা খুলতে দেরি হয় বেশ অনেকক্ষণ । এসি কামরায় ঘামতে শুরু করেন সকলে। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন যাত্রীরা। মেট্রো সূত্রে জানা গেছে, চালক প্রথম বারের চেষ্টায় দরজা খুলতে পারেননি। দ্বিতীয় চেষ্টায় দরজা খোলে।