লোকসভা ভোট যত এগিয়ে আসছে, ততই বেড়ে চলেছে মার-দাঙ্গা আর খুনোখুনির রাজনীতি। নদীয়ার কৃষ্ণগঞ্জের বিধায়ক খুনের পর এবার আবারও আক্রান্ত শাসক দল। প্রকাশ্য দিবালোকে দুষ্কৃতীদের হাতে আক্রান্ত হলেন এক সক্রিয় তৃণমূল কর্মী। গুরুতর জখম অবস্থায় তাঁকে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। সেখানেই তাঁর চিকিৎসা চলছে।
স্থানীয় ও প্রশাসন সূত্রে জানা গেছে, আক্রান্ত ওই তৃণমূল কর্মীর নাম শেখ ইব্রাহিম। বাড়ি আরামবাগের হিয়াৎপুর এলাকায়। আরামবাগের আরাণ্ডি ২ নম্বর অঞ্চলের যুব তৃণমূল সংগঠনের সঙ্গে তিনি যুক্ত। বিভিন্ন সময় দলের কর্মসূচিতে তিনি সক্রিয় ভূমিকা পালন করে থাকেন। ইব্রাহিম জানান, বুধবার সকালে তিনি মোটর বাইকে স্থানীয় পুড়া বাজারে গিয়েছিলেন। সেখানে ৭–৮ জন দুষ্কৃতী তাঁকে একটি নির্জন স্থানে ডেকে নিয়ে যায়।
তিনি বলেন, ‘প্রথমে বুঝতে পারিনি কেন ডেকে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। তাই কোনও কিছু না ভেবেই সেখানে চলে যাই। তারপর ওই দুষ্কৃতীরা লাঠি, রড–সহ অন্যান্য অস্ত্র দিয়ে আমাকে বেধড়ক মারধর করে। সেই সময় আমার মাথা ফেটে যায়। চিৎকার শুনে এলাকার মানুষ ছুটে এলে দুষ্কৃতীরা পালিয়ে যায়। এরপর স্থানীয় মানুষ ও দলের সহকর্মীরা আমাকে উদ্ধার করে আরামবাগ মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করেন।’
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, ইব্রাহিমের মাথায় গুরুতর আঘাত লেগেছে। এ ছাড়া শরীরের অন্যান্য অংশেও বেশ কিছু জায়গায় আঘাত রয়েছে। এদিকে, এই ঘটনায় আর এক যুব তৃণমূল কর্মী মুন্সি আশরফ আলি বলেন, ‘আমি ও ইব্রাহিম সকালে একই সঙ্গে বাইক নিয়ে বেরিয়েছিলাম। আমি হেলান বাজারের দিকে যাই। আর ইব্রাহিম পুড়া বাজারের দিকে গিয়েছিল। কিছুক্ষণ পরই ওর আক্রান্ত হওয়ার খবর পাই। এই ঘটনায় আরামবাগ থানায় অভিযোগ জানানো হয়েছে।’ তাঁর অভিযোগ, বিজেপি কর্মীরাই এই ঘৃণ্য কাজ করেছে।
উল্লেখ্য, গত কয়েকদিন ধরেই আরামবাগ মহকুমার বিভিন্ন এলাকায় তৃণমূল কর্মী-সমর্থকদের ওপর আক্রমণের ঘটনা শুরু হয়েছে। মাত্র কয়েকদিন আগেই পুরশুড়ার জঙ্গলপাড়া এলাকায় এক তৃণমূল নেতাকে বেধড়ক মারধর করে ঝোপের মধ্যে ফেলে দিয়েছিল দুষ্কৃতীরা। এ ছাড়াও পুরশুড়ারই সোয়ালুক বাজারে এক তৃণমূল কর্মীকে মারধর করে পা ভেঙে দেয় দুষ্কৃতীরা। বারবার নেতা-কর্মীদের ওপর আক্রমণের ঘটনায় তৃণমূল শিবিরে ক্ষোভ বাড়ছে। নদীয়ার ঘটনার পর এই ঘটনাতেও সরাসরি বিজেপির হাত আছে বলেই মনে করছে দল।