দামি মোবাইল ফোন, বাইক না কিনে দেওয়ায় মায়ের গায়ে আগুন লাগিয়ে দিল নাবালক ছেলে। অভিযুক্ত ছেলে এবছরের মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। মোবাইল, বাইক কিনে দেবার জন্য প্রায়শই বায়না জুড়তো মায়ের কাছে ছেলে আর সেই আবদার না মেটানোয় বাড়িতে নিয়মিত অশান্তি হত। সরস্বতী পুজোর দিন রাতে বাড়ি ফেরেনি সে। মা বলেছিলেন, “তোর মাধ্যমিক পরীক্ষা, আর তুই পড়াশোনা না করে বাইরে রাত কাটাচ্ছিস?” এর জেরেই ছেলে মায়ের গায়ে কেরোসিন তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দিয়ে বাইরে থেকে দরজা বন্ধ করে দেয়।
প্রতিবেশীরা এসে অগ্নিদগ্ধ বধূকে উদ্ধার করে হাসপাতালে পাঠান। বেনজির এই হিংসার ঘটনাটি ঘটেছে নিউ টাউনের শুলংগড়ি কলোনি পাড়ায় ঠিক মাধ্যমিক পরীক্ষা শুরুর আগের দিন। এই হিংসার শিকার সোমা মান্না নব্বই শতাংশ অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় আর জি কর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অভিযুক্ত নাবালক ছেলেকে গ্রেফতার করেছে বিধাননগর পুলিশ কমিশনারেট। মঙ্গলবার বিধাননগরে জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডের কাছে পেশ করা হলে তাকে হোমে রাখার নির্দেশ দেন মুখ্য বিচারক। ১৪ দিন পর অভিযুক্তকে আবার জুভেনাইল জাস্টিস বোর্ডে পেশ করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।
অগ্নিদগ্ধ বধূ সোমার স্বামীর নাম সমীর মান্না। পারিবারিক গোলমালের জন্য স্বামীর সঙ্গে থাকেন না সোমা। এই দম্পতির দু’টি সন্তান। ছোটছেলে নাগেরবাজারের শহীদ রামেশ্বর বিদ্যামন্দিরের ছাত্র। প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, ভয় পেয়ে ছেলে ঘরে ঢুকে প্রথমে মায়ের গায়ে কম্বল চাপা দিয়ে বাঁচানোর চেষ্টা করে। প্রতিবেশীরা তাকে আটকে রেখে নিউটাউন থানায় খবর দেন। এদিকে অভিযুক্ত ছেলের দাবি, পরীক্ষার সময় দেরি করে বাড়ি ফেরায় মা তাকে বকাবকি করেন। এর জেরে মা–ই নিজের গায়ে কেরোসিন ঢেলে আগুন লাগান।
যদিও বিধাননাগর পুলিশ কমিশনারেটের তরফে জানানো হয়েছে, আর জি কর হাসপাতালে সোমা মান্নার জবানবন্দি রেকর্ড করা হয়েছে। মা জানিয়েছেন, ছেলেই তাঁর গায়ে আগুন লাগায়। পারিবারিক অশান্তির জেরেই এই ঘটনা ঘটেছে।