গেরুয়া শিবিরের হুমকিতেই এবার বাতিল হল দলিত নেতা জিগনেশ মেবানির অনুষ্ঠান। আর তারপরই এর প্রতিবাদে পদত্যাগ করলেন গুজরাটের আমেদাবাদের এইচ কে আর্ট কলেজের প্রিন্সিপাল হেমন্ত কুমার শাহ এবং ভাইস প্রিন্সিপাল মোহনভাই পারমার।
প্রিন্সিপালের পদত্যাগের পর ভডগামের বিধায়ক জিগনেশ বলেন, ‘ট্রাস্ট মেরুদণ্ডহীন। একজনের বক্তৃতায় ভীত বিজেপি। এই ঘটনায় ওদের আতঙ্ক, নীচতা ধরা পড়েছে। কলেজের অনুষ্ঠানের জন্য কালও তৈরি ছিলাম, আজও আছি; আগামী দিনেও থাকব। কলেজের ট্রাস্টকে সাহস দেখাতে হবে। বিজেপির গুণ্ডারা হুমকি দিতেই ট্রাস্ট বার্ষিক অনুষ্ঠান বাতিল করল। ওই কলেজ থেকে। স্নাতক হয়েছি। বি আর আম্বেদকরের জীবন নিয়ে আলোচনার কথা ছিল। নৈতিক দায় নিয়ে পদত্যাগ করলেন প্রিন্সিপাল। ওঁকে কুর্নিশ।’
প্রসঙ্গত, আমেদাবাদের এইচ কে আর্ট কলেজের প্রাক্তন ছাত্র জিগনেশ। কলেজের বার্ষিক অনুষ্ঠানে তাকে প্রধান অতিথি করে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রিন্সিপাল। অভিযোগ, মেবানির উপস্থিতিতে আপত্তি জানায় বিজেপির মদতপুষ্ট ছাত্রনেতারা। কলেজ ট্রাস্টকে অনুষ্ঠান বাতিল করার জন্য চাপ দেয় তারা। বেগতিক দেখে অনুষ্ঠানের অনুমোদন বাতিল করে ট্রাস্ট। পদত্যাগ করেন প্রিন্সিপাল এবং ভাইস প্রিন্সিপাল।
প্রিন্সিপালের কথায়, ‘কলেজে বার্ষিক অনুষ্ঠানে মেবানি এলে তাণ্ডব করার হুমকি দিয়েছে ওরা। এদেশে প্রত্যেকের বাক স্বাধীনতা আছে। জিগনেশেরও সেই অধিকার রয়েছে। রাজনৈতিক চাপে কলেজ সেই স্বাধীনতা খর্ব করছে, তা দুর্ভাগ্যজনক। আমি ব্যক্তি স্বাধীনতায় বিশ্বাসী। রবিবার বিকেল চারটায় অনুষ্ঠানের অনুমােদন খারিজ করে চিঠি পাঠিয়েছে ট্রাস্ট। রাজনৈতিক পরিস্থিতির কারণ দেখিয়েছে। জানতে চাই পরিস্থিতি কি?’
এর পাশাপাশি পদত্যাগ পত্রে তিনি লিখেছেন, ‘বর্তমান রাজনৈতিক বাতাবরণে সাংবিধানিক স্বাধীনতা, বাক স্বাধীনতার কণ্ঠরোধ করা হচ্ছে। সায় দিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের ছাত্র নেতারা হুমকি দিচ্ছে। তাদের চাপেই যে কলেজের প্রেক্ষাগৃহ ব্যবহার করতে দেওয়া হচ্ছে না, সেটা খুব স্পষ্ট।’ সরাসরি উল্লেখ না করলেও তাঁর বক্তব্যে যে বিজেপিকেই নিশানা করেছেন প্রিন্সিপাল হেমন্ত কুমার শাহ, তা বলাই বাহুল্য।