সময়টা সত্যিই খুব খারাপ যাচ্ছে গেরুয়া শিবিরের। লোকসভা ভোটের মুখে আবারও সুপ্রিম কোর্টে বড়সড় ধাক্কা খেল রাজ্য বিজেপি। পরীক্ষার মরশুমে রাজ্যজুড়ে মাইক বাজানো নিয়ে রাজ্য সরকারের নির্দেশকে চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা করেছিল রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। সোমবার তা বাতিল করে দেন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ। নির্বাচনী প্রচারের থেকে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে আদালত তার রায়ে জানিয়েছে। এর আগে রথযাত্রা ইস্যুতে শীর্ষ আদালতের রায় বিজেপির বিপক্ষে গিয়েছিল।
পরীক্ষার কারণে ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে মার্চের শেষ পর্যন্ত রাজ্যের সর্বত্র মাইক বাজানো বা লাউডস্পিকারে ব্যবহার নিষিদ্ধ করে নির্দেশিকা জারি করেছে প্রশাসন। কারণ রাজনৈতিক সভা–সমাবেশের থেকে অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ হল ছাত্রছাত্রীদের পরীক্ষা। অন্যদিকে, বিজেপির দাবি ছিল, রাজনৈতিক কার্যকলাপ করার জন্য সভা–সমাবেশ করতেই হয়। তাই তাদের মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হোক।
কিন্তু এই নিয়ে রাজ্য দূষণ নিয়ন্ত্রণ পর্ষদ আবেদন জানিয়েছিল মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করলে শব্দ দূষণ ছড়াচ্ছে। তাই তা নিষিদ্ধ করা হোক। কলকাতা হাইকোর্ট সেই আবেদনে সাড়া দিয়ে মাইক ব্যবহার নিষিদ্ধ করার রায় দিয়েছিল। এরপর সেই রায়কেই চ্যালেঞ্জ করে সর্বোচ্চ আদালতে যায় রাজ্য বিজেপি। তাদের তরফে দাখিল রিট পিটিশনে বলা হয়, শব্দদূষণ নিয়ন্ত্রণে পরীক্ষা কেন্দ্রের কাছাকাছি মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করার যুক্তি মানা যেতে পারে। কিন্তু সারা রাজ্যে মাইক বাজানো নিষিদ্ধ করে জারি করা রাজ্যের নির্দেশিকা অসাংবিধানিক।
এদিন সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চে সেই মামলার শুনানি ছিল। প্রাথমিক সওয়াল জবাবের পরে মামলাটি খারিজ করে দিয়েছে আদালত। সূত্রের খবর, আইনজীবী মুকুল রোহতগি সওয়াল করতে গিয়ে বলেন, ‘প্রত্যেক বছর এমন সমস্যা তৈরি করা হয়। তাই মহামান্য বিচারপতির কাছে আমার আবেদন আগের রায় নস্যাৎ করে দিয়ে মাইক বা লাউডস্পিকার ব্যবহার করার অনুমতি দেওয়া হোক।’
এর পাল্টা প্রধান বিচারপতি বলেন, ‘এই সময়ে ছাত্রছাত্রীরা পরীক্ষা দেয়। তাছাড়া তখন পড়তেও বসে বহু ছাত্রছাত্রী। আপনাদের মাইক লাগিয়ে সভা করতে হলে ময়দানে করুন।’ এই বলে মামলাটি বাতিল করে দেন তিনি। আদালত তার রায়ে জানায়, নির্বাচনী প্রচারের থেকে ছাত্রছাত্রীদের পড়াশোনা অনেক বেশি গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করে তারা।