অমুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়ার প্রস্তাবে আনা বিলের বিরোধিতায় দীর্ঘদিন ধরেই অগ্নিগর্ভ সারা উত্তরপূর্বাঞ্চল। এবার নাগরিকত্ব বিলের প্রতিবাদে ভূপেন হাজারিকাকে ভারতরত্নের জন্য মনোনীত করায় কেন্দ্রের বিরোধিতা করলেন তাঁর ছেলে। প্রয়াত সঙ্গীতজ্ঞ ভূপেন হাজারিকার মার্কিনপ্রবাসী ছেলে তেজ হাজারিকা নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬, নিয়ে কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বিবৃতি দিয়ে বলেছেন, ‘বাস্তবে আমার বাবা মনেপ্রাণে যা বিশ্বাস করতেন তার থেকে এই বিল সম্পূর্ণ বিপরীত। ভূপেন হাজারিকার জীবনের আদর্শ বা মূল্যবোধ, কিছুই এর সঙ্গে মেলে না। এই ভারতরত্ন আসলে সাময়িক সস্তা রোমাঞ্চ পাওয়ার ছল।’
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেছেন, ‘অনেক সাংবাদিক আমাকে প্রশ্ন করছেন বাবার হয়ে আমি ভারতরত্ন নেব কি নেব না। আমি বলতে চাই, প্রথমত, আমি এখনও পর্যন্ত কেন্দ্রের তরফে কোনও আমন্ত্রণ পাইনি, সুতরাং তা নস্যাৎ করার কোনও প্রশ্ন নেই। দ্বিতীয়ত, দ্বিতীয়ত, কেন্দ্র নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল নিয়ে যে পদক্ষেপ করছে তা এই জাতীয় সম্মানপ্রাপ্তি, যা কি না স্বল্পমেয়াদি ক্ষণিকের আনন্দ ছাড়া কিছু নয়, তার থেকে ঢের বেশি গুরুত্বপূর্ণ।’ তাঁর মতে, বর্তমান পরিস্থিতিতে এই পুরস্কার ক্ষণিকের আনন্দ বই কিছু নয়। বাবার নাম ও খ্যাতিকে ব্যবহার করা হচ্ছে বলেও অভিযোগ করেন তিনি। তেজের কথায়, বাবা ভূপেন হাজারিকা বেঁচে থাকলেও এই বিলের বিরোধিতা করতেন। কারণ, এই বিল বাবার ঘোষিত অবস্থানের বিরোধী। তাঁর মতে, এহেন পরিস্থিতি ভারতরত্ন গ্রহণ মানে, শিল্পীকে অসম্মান।
প্রসঙ্গত, আসামে অবৈধ শরণার্থী কমাতে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল, ২০১৬ আনতে চাইছে সরকার। বিরোধীদের তীব্র প্রতিবাদ সত্ত্বেও লোকসভায় তা পাস হয়ে গিয়েছে। আজ তা রাজ্যসভায় পাস হতে চলেছে। আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও বাংলাদেশের অ-মুসলিম শরণার্থীদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করার এই বিলকে দৃশ্যত অসাংবিধানিক এবং অগণতান্ত্রিক বলেই মনে করেন তেজ। এই বিলের বিরোধিতা করার পাশাপাশি সোমবার মোদী সরকারের উদ্দেশ্যে তাঁর খোঁচা, ‘ভারতরত্ন এবং দীর্ঘতম রেলসেতু বানিয়ে ভারতে শান্তি এবং সমৃদ্ধি আসবে না, একমাত্র জনপ্রিয় আইন এবং দূরদৃষ্টিই তা আনতে পারে।’