আজ, সোমবার চতুর্থ দিনে পড়ল গুজ্জরদের অবস্থান বিক্ষোভ। চাকরি এবং শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে পাঁচ শতাংশ সংরক্ষণের দাবিতে বিক্ষোভ করছেন গুজ্জররা। রবিবার অবস্থান বিক্ষোভের তৃতীয় দিনে অবশ্য ওই বিক্ষোভ হিংসাত্মক হয়ে ওঠে। পুলিশের দাবি সেখানে অজ্ঞাতপরিচয় কিছু দুষ্কৃতীর দল গুলি শূন্যে ৮-১০ রাউন্ড গুলি চালায়। এমনকি পুলিশের তিনটি গাড়িও জ্বালিয়ে দেওয়া হয়। পুলিশের এ-ও জানিয়েছে, বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরে আহত হয়েছেন চার জওয়ান। পরে উত্তেজিত জনতাকে বিক্ষিপ্ত করতে কাঁদানে গ্যাসের শেল ছুঁড়তে হয় পুলিশকে।
১৯৩১ সালের জাতিভিত্তিক জনগণনা অনুযায়ী, গুজ্জররা গোটা রাজস্থানি জনসাধারণের পাঁচ শতাংশ। ছড়িয়ে রয়েছেন ২১টি জেলা জুড়ে। তাঁদের দাবি, বিশেষ অনগ্রসর শ্রেণির তালিকায় ৫ শতাংশ সংরক্ষণ দিতে হবে তাঁদের যাতে তাঁরা শিক্ষা ও চাকরি ক্ষেত্রে বিশেষ সুযোগ পান। এ ব্যাপারে গত মাসেই সরকারকে ২০ দিনের ‘শেষ সুযোগ’ দিয়েছিলেন গুজ্জর নেতা কিরোরি সিং বৈনসালা। তখনই জানানো হয়েছিল, ওই সময়সীমার মধ্যে এ ব্যাপারে সরকার নিজের অবস্থান স্পষ্ট করুক। নয়তো বিক্ষোভ শুরু করবে গুজ্জর সম্প্রদায়।
সেই সময় পেরিয়ে গেলে সাওয়াই মাধোপুর জেলায় মালারনা দুঙ্গার-এ ‘মহাপঞ্চায়েত’ বসিয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, রেলের ট্র্যাকের উপর অবস্থান বিক্ষোভ করা হবে। সেই মতো শুক্রবার থেকে শুরু হয় প্রতিবাদ-বিক্ষোভ। শনিবার সরকারের এক প্রতিনিধিদল বৈনসালা ও তাঁর সমর্থকদের সঙ্গে কথা বলতে গেলেও আলোচনা ফলপ্রসূ হয়নি। ফলে ওঠেনি অবস্থান-ধর্না। যার জেরে ব্যাপক ভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয় ট্রেন চলাচল। সাতটি ট্রেন বাতিল করে দেওয়া হয়। ন’টি ট্রেন রাজস্থানের অন্য দিকে ঘুরিয়ে দেওয়া হয়।
যে সব ট্রেনগুলি বাতিল করা হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে হজরত নিজামুদ্দিন-উদয়পুর এবং উদয়পুর-হজরত নিজামুদ্দিন এক্সপ্রেস। তা বাদে বায়ানা-জয়পুর এবং জয়পুর-বায়ানা এক্সপ্রেস আংশিক ভাবে বাতিল করা হয়। উত্তর পশ্চিম রেলওয়ের মুখপাত্র জানিয়েছেন, শুক্রবার ও শনিবার মিলিয়ে প্রায় ২০০ টি ট্রেন হয় বাতিল হয়েছে, নয় আংশিক ভাবে বাতিল হয়েছে নয়তো তার অভিমুখ ঘুরিয়ে দেওয়া হয়েছে।
তবে রবিবারের হামলা হিংসাত্মক হয়ে ওঠার পিছনে দু’রকম বয়ান শোনা যাচ্ছে। একাংশের দাবি, অবস্থান-বিক্ষোভ ওঠাতে পুলিশই শূন্যে গুলি চালিয়েছে। অন্য দিকে পুলিশের দাবি, অজ্ঞাতপরিচয় আততায়ীরা গুলিচালনার নেপথ্যে। পুলিশের দু’টি জিপ ও একটি বাস জ্বালিয়ে দেওয়া হয়েছে।