স্যর আইজ্যাক ভিভিয়ান আলেকজান্ডার রিচার্ডস ওপরে হাত দুটো তুলে তালি দিচ্ছে। মুখে চওড়া হাসি। এর থেকে মন ভাল করে দেওয়া দৃশ্য আর হয় না। অ্যান্টিগায় ওর নামাঙ্কিত স্টেডিয়ামে ওয়েস্ট ইন্ডিজ তার কিছুক্ষণ আগে ইংল্যান্ডকে দ্বিতীয় টেস্টে হারিয়েছে। হয়তো এই জয়ের মধ্যে দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বিশ্ব ক্রিকেটে আবার তাদের প্রত্যাবর্তনের বার্তা দিল। পুরো কৃতিত্ব আর কারও নয়, ওয়েস্ট ইন্ডিজের প্লেয়ারদের প্রাপ্য। আর সামনে থেকে নেতৃত্ব দিল জেসন হোল্ডার। প্লেয়ার হিসেবেই হোক, বা ক্যাপ্টেন হিসেবে, ইংল্যান্ডকে দাঁড়াতেই দিল না ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
কিছু দুর্দান্ত ব্যক্তিগত পারফরমেন্স আমরা দেখলাম। তবে তার মধ্যেও আলাদা করে মনে থাকবে আলজারি জোসেফকে। ম্যাচের তৃতীয় দিন সকালে ওর মা মারা গেলেন। তবু ও খেলেছে। গুরুত্বপূর্ণ উইকেট নিয়ে দলকে জিততে সাহায্য করেছে। ইংল্যান্ডের প্লেয়াররাও তরুণ এই ক্যারিবিয়ান ক্রিকেটারের উদ্দেশে শোক জ্ঞাপনের জন্য কালো আর্ম ব্যান্ড পরে খেলেছে। সেটাও মন ছুঁয়ে গেছে। সেটাও প্রশংসনীয়। এখন কেউ সেঞ্চুরি বা হাফ সেঞ্চুরি করলে বিপক্ষ ফিল্ডারদের অভিনন্দন জানানোর পাট চুকে গেছে। সেখানে জো রুটের দলের এই কালো ব্যান্ড পরে খেলা তরুণ প্রজন্মের কাছে সঠিক বার্তা দেবে। দলের জন্য ব্যক্তিগত আত্মত্যাগ একতা তৈরি করে। মাকে হারিয়েও জোসেফ যে খেলে গেল, সেটা থেকেই বোঝা যাচ্ছে, ও কতটা টিমম্যান।
রাঙ্কিং ও বর্তমান পারফরমেন্সের বিচারে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাটিতে তিন ম্যাচ সিরিজ শুরুর আগে স্পষ্টভাবে ফেবারিট ছিল র্যাংকিংয়ে তৃতীয়স্থানে থাকা ইংল্যান্ড। সেখানে ওয়েস্ট ইন্ডিজের অবস্থান অষ্টমস্থানে। এ ছাড়া গত বছর ৪টি টেস্ট সিরিজ খেলে মাত্র একটিতে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ।
চলতি বছরের প্রথম সিরিজের শুরুটাও দুর্দান্তভাবে করে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ইংল্যান্ডকে চমকে দেয় তারা। ব্রিজটাউনে সিরিজের প্রথম টেস্টে ৩৮১ রানে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর দ্বিতীয় টেস্ট তারা জিতে নেয় ১০ উইকেটে বড় ব্যবধানে। ১০ বছর পর ইংলিশদের সিরিজ হারানো পর এখন নতুন লক্ষ্য নির্ধারন করেছে ক্যারিবীয়রা। সেটি হলো, তৃতীয়বারের মতো ইংল্যান্ডকে হোয়াইটওয়াশ করা। এর আগে ১৯৮৪ সালে ঘরের মাঠে আর ১৯৮৬ সালে ইংল্যান্ডের মাটিতে ৫-০ ব্যবধানে সিরিজ জিতেছিল উইন্ডিজ।