বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ কাথিতে সভা করে যাওয়ার পরেই এলাকায় তাণ্ডব চালিয়েছিল বিজেপি কর্মী-সমর্থকেরা। ভাঙচুর হয়েছিল তৃণমূলের পার্টি অফিস। পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছিল দলের পতাকা, ব্যানার, পোস্টার। এবার ঠাকুরনগরে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী সভা করে যাওয়ার পরেই খুন হতে হল এক তৃণমূল বিধায়ককে। দুটো ঘটনার মধ্যেই রাজনৈতিক চক্রান্তের গন্ধ পাচ্ছে ওয়াকিবহাল মহল।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের অভিযোগ, ঠাকুরনগরের সভায় প্ররোচনামূলক ভাষণ দিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী মোদী। যার ফলে উত্তেজিত বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের হাতে বলি হতে হল তৃণমূল কর্মীকে। নিজের নির্বাচনী এলাকার অনুষ্ঠানেই কৃষ্ণগঞ্জের তৃণমূল বিধায়ক সত্যজিৎ বিশ্বাসকে গুলি করে খুন করে সেই উত্তেজনা প্রশমিত করেছে বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা। তাই ঘটনার পর সরাসরি অভিযোগের আঙুল উঠেছে বিজেপির দিকেই।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, এলাকার মতুয়া ভোট ব্যাঙ্কের দখল নিতেই পরিকল্পনা মাফিক খুন করা হয়েছে সত্যজিৎকে। তৃণমূলের মহাসচিব ও শিক্ষা মন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায় সরাসরি বিজেপির দিকেই আঙুল তুলে বলেন, ‘মতুয়া সংগঠন করতো সত্যজিৎ। যতেষ্ট জনপ্রিয় ছিল। জেলার দাপুটে নেতা হিসেবে ওর পরিচিতি ছিল। এটি একটি সংঘটিত খুন। এর পেছনে রয়েছে বিজেপিই। সত্যজিতকে সরিয়ে ফেলাই ছিল টার্গেট। সীমান্ত এলাকায় দুষ্কৃতী ঢোকাচ্ছে বিজেপি। মতুয়াদের সংগঠক এই যুব নেতাকে তাই খুন হতে হল’।
স্থানীয় বাসীন্দাদের বক্তব্য, এলাকায় মতুয়াদের মধ্যে যথেষ্ট জনপ্রিয়তা ছিল সত্যজিতের। এই বিধানসভায় মতুয়া ভোট একটি বড় নির্ণায়ক শক্তি বলেই মনে করা হয়। তৃণমূলের একাংশের বক্তব্য, মতুয়াদের মধ্যে জনপ্রিয়তায় ভয় পেয়েই শেষপর্যন্ত সরিয়ে দেওয়া হয় সত্যজিতকে। এনিয়ে মুকুল রায়ের সঙ্গে তাঁর একটা চাপা সংঘাতও ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১৫ সালে এই কেন্দ্রের উপনির্বাচনে জয়ী হন সত্যজিৎ। ২০১৬ সালে কৃষ্ণগঞ্জ বিধানসভার নির্বাচনে বিপুল ভোটে জিতে বিধায়ক হন তিনি। গতকাল শনিবার ভর সন্ধেয় মাজদিয়ার ফুলবাড়ি এলাকায় সরস্বতী পুজোর এক অনুষ্ঠানে যান সত্যজিত। সেখানেই তাঁকে পয়েন্ট ব্ল্যাঙ্ক রেঞ্জ থেকে গুলি করা হয়। আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাঁকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হলে তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করা হয়। ঘটনায় এনিয়ে মুকুল রায় সহ মোট ৪ জনের বিরুদ্ধে এফআইআর করা হয়েছে। এখনও পর্যন্ত কার্তিক মণ্ডল ও সুজিত মণ্ডলকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
