ইলিশ বললেই বাঙালি মধ্যবিত্তের গায়ে ছেঁকা লাগার জোগাড় হয়। একদিকে তো পদ্মার ইলিশ ঢোকাই নিষিদ্ধ। তার উপর হিমায়িত ‘মর্গ’ থেকে বার করে আনা মাছ। তাও কিনা সুদূর মায়ানমার বা মুম্বই-গুজরাত উপকূল থেকে আমদানি করা। অন্যদিকে সরস্বতী পুজো মানেই বাঙালবাড়িতে জোড়া ইলিশের আগমন৷ তাই বাঙালির ইলিশের চাহিদা মেটাতে বাজারে এসে গিয়েছে পর্যাপ্ত মাছ। সবথেকে উপরি পাওনা হল, এ বছর দামও থাকবে সাধ্যের মধ্যেই।
দুধের সাধ ঘোলে হলেও রসনা তৃপ্তির জন্য সরস্বতী পুজো উপলক্ষে কলকাতার বাজার কাঁপাবে প্রধানত মায়ানমার এবং কিছু পরিমাণে রাজ্যের ইলিশ। জোড়া ইলিশের পর্যাপ্ত জোগানের জন্য প্রায় ২৫ টন ইলিশ বাজারে ছাড়া হবে।
রাজ্য মৎস্য দফতর এবং রাজ্যের ফিশ ইম্পোর্ট অ্যাসোসিয়েশন (হিলসা) সূত্রে জানা গিয়েছে, ২০১২ সাল থেকে বাংলাদেশ সরকার পদ্মার ইলিশ পাঠানো বন্ধ করে দিয়েছে। ২০১০-’১১ সালে শেষবারের মতো বাংলাদেশ থেকে প্রায় সাত হাজার টন পদ্মার ইলিশ এসেছিল। ২০১৭ সালের এপ্রিল মাসে বাংলা নববর্ষের আগে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফরে এসেছিলেন। তিনি পদ্মার ‘তোফা’ হিসাবে ৩০ কেজি ইলিশ নিয়ে এসেছিলেন। ২০১৮ সালের গত ৮ জানুয়ারি বাংলাদেশের মৎস্যমন্ত্রী নারায়ণচন্দ্র চন্দ ইলিশের উপর নিষেধাজ্ঞা তুলে দেওয়ার কথা ঘোষণাও করেছিলেন। তা সত্ত্বেও পদ্মার ইলিশ ঘরে ঢোকেনি এপার বাংলায়।
তবে উৎসবের সময় ইলিশের জোগানে যাতে ঘাটতি না পড়ে, তার জন্য আগে থেকেই তৈরি ছিলেন ব্যবসায়ীরা। গত বর্ষায় ডায়মন্ডহারবার, কাকদ্বীপ, নামখানা, দীঘা উপকূলে প্রচুর পরিমাণে ইলিশ উঠেছিল। সেই ইলিশ প্রচুর মজুত রয়েছে হিমঘরে। সেই সঙ্গে মায়ানমারের বড় বড় সাইজের ইলিশ এ রাজ্যে আমদানি হয়েছে। সরস্বতী পুজো উপলক্ষে কলকাতার রাজাবাজার, ডানলপ, কসবা, বারাসত, মধ্যমগ্রাম প্রভৃতি একাধিক হিমঘরে এই রুপোলি ফসল সঞ্চিত করে রাখা ছিল। ৬০০ থেকে ১৫০০ টাকার মধ্যেই এবার তৃপ্ত হবে বাঙালির ইলিশ-রসনা৷