শুক্রবারই সমাপ্ত হয়েছে পঞ্চম বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। এই সম্মেলনের তাৎপর্য বোঝাতে যদি কোনো বাক্য প্রয়োগ করা যায় তবে সেটি হল, ‘ফল সূদুরপ্রসারী’।
এবারের সম্মেলন দিয়েছে প্রতিটি ক্ষেত্রে এগিয়ে যাওয়ার বার্তা। সিমেন্ট, জিও, জলবিদ্যুৎ, মিথেন গ্যাসের লগ্নি হচ্ছে। শুধু এসবেই থেমে থাকবে না রাজ্য, আর্থ-সামাজিক ক্ষেত্র, সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রের আদানপ্রদানে জোর দেবে। এসব ক্ষেত্রে লগ্নি টেনে আনবে তা প্রমাণ করলো সরকার। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ব্রিটেন ও ইউএসএ-এর তিনটি করে এবং থাইল্যান্ডের দু’টি, কানাডা, জাপানের সাথে একটি করে শিক্ষা সংস্থার সাথে গাঁটছড়া বাঁধলো রাজ্য।
পরিবহণ, বিদ্যুৎ দফতরের সাথে চুক্তি হল বিদেশি সংস্থার। ইউকে বিজনেস কাউন্সিল হাত ধরল পশ্চিমবঙ্গ শিল্পোন্নয়ন নিগমের। ক্ষুদ্র ও মাঝারি শিল্প ক্ষেত্রে ই-কমার্সের সাথে এবার জুড়বে জাপানের নেবুলার মতো সংস্থা। তথ্যপ্রযুক্তির সাথে আমাজন, মৎস্য দফতরের সাথে হাওয়াই প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি, ইউনিভার্সিটি অফ আরিজোনা, নর্থওয়া বিশ্ববিদ্যালয় কাজ করতে আগ্রহপত্রে সই করল।
শিক্ষাক্ষেত্রে এবারের সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা নিয়েছে। কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ১০টি, যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের সাথে ২টি, প্রেসিডেন্সি বিশ্ববিদ্যালয় ও নেতাজি ওপেন ইউনিভার্সিটির সাথে একটি করে বিদেশের নামী শিক্ষা সংস্থার চুক্তি হল। শিল্পমন্ত্রী অমিত মিত্র বলেন, ‘আগে বিদেশিরা বেড়াতে আসতেন। এখন আসছেন লগ্নির জন্য এটা আসলে অ্যাকশন সামিট। সব মিলিয়ে চারটি স্টেট টু স্টেট চুক্তি হয়েছে।’ এবার ইউরোপের লুক্সেমবার্গের মতো দেশ এসেছে, এসেছিল সংযুক্ত আরব আমিরশাহি, দুবাই এর মতো দেশ।
জানা গেছে, এবার শিল্প সংক্রান্ত কোনও অভিযোগ জানানোর জন্য থাকবে ‘শিল্পদিশা’ অ্যাপ। বাংলার রপ্তানি পরিস্থিতি জানতে বা প্রয়োজনীয় তথ্যাদি জানবার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর হাত ধরে উদ্বোধন হল নতুন অ্যাপ। পরিবর্তিত পরিস্থিতির সাথে তাল মিলিয়ে সর্বশেষ তথ্য জানাবে ‘মণিভান্ডার’। শিল্প সংক্রান্ত একাধিক বইও প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
মুকেশ আম্বানি, সজ্জন জিন্দালদের মতো শিল্পপতিদের লগ্নির বার্তা নিয়ে যে সম্মেলনের শুরু হয়েছিল বৃহস্পতিবার, পরের দিন অর্থাৎ শুক্রবারের সমাপ্তি অনুষ্ঠানের পরও রয়ে গেল তার রেশ।