বছরের পর বছর ধরে বিশ্ব ফুটবলের অন্যতম সেরা ফুটবলারের তকমা জড়িয়ে আছে ক্রিস্টিয়ানো রোনালদোর গায়ে। বহু রেকর্ডের বরপুত্র এই পর্তুগিজ তারকাকে অনুসরণ করে আধুনিক ফুটবলের বহু তারকারাও। ক্যারিয়ারে ২৭টি শিরোপা জেতার স্বাদ পেয়েছেন জুভেন্টাসের উইঙ্গার, যার মধ্যে পাঁচটি লিগ, পাঁচটি চ্যাম্পিয়নস লিগ আর একটি উয়েফা ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নশিপের শিরোপা।
বয়সটা ৩৪ হল। বয়সটা যে নেহাতই সংখ্যা তা প্রমাণেই ব্যস্ত ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো। এই বয়সে অধিকাংশ ফুটবলারই বুটজোড়া তুলে রাখেন। উদাহরণ হিসেবে মনে পড়ছে মার্কো ফন বাস্তেন, মাইকেল আওয়েন কিংবা জিনেদিন জিদানের নাম। আবার ব্রাজিলের সুর্দশন কাকা মধ্য তিরিশে মেজর লিগ সকারে নাম লিখিয়েছিলেন। কিন্তু সিআরসেভেন যে অন্যদের থেকে আলাদা। মঙ্গলবার ৩৪ বছরে পা দেওয়ার দিনে পর্তুগিজ মহাতারকাটির লক্ষ্য, জুভেন্টাসকে উয়েফা চ্যাম্পিয়ন্স লিগ জেতানো। এই প্রসঙ্গে ‘ওল্ড লেডি অব তুরিন’এর অধিনায়ক জিওর্জিও চেলিনির একটি মন্তব্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। সম্প্রতি তিনি বলেছেন, ‘আগে আমরা ইউরোপ সেরা হওয়ার স্বপ্ন দেখতাম। রোনালদো আসার পর দর্শন বদলেছে। এখন চ্যাম্পিয়ন্স লিগই আমাদের পাখির চোখ।’
এগারো বছর আগে প্রথমবার বিশ্বের সেরা ফুটবলারের তকমা পেয়েছিলেন রোনালদো। তারপর বদলেছে অনেককিছুই। শুধু একইরকম থেকে গিয়েছেন তিনি। এই ২০১৯ সালেও রোনালদো বিশ্বের অন্যতম সেরা। একমাত্র প্রতিদ্বন্দ্বী লায়োনেল মেসি। ৩৪ বছর বয়সেও তাঁর ফিটনেস ঈর্ষণীয়। সিআরসেভেন অনুরাগীরা বলে থাকেন, প্রিমিয়ার লিগ এবং লা লিগায় সফল হওয়ার পরেও তাঁর খিদে বিন্দুমাত্র কমে না। তাই জুভেন্টাসের অফার নিয়ে রোনালদো সগর্বে বলতে পারেন, ‘চ্যালেঞ্জ নিতে ভালোবাসি বলেই তুরিনে এসেছি। এই বয়সে অনেকেই চীনে চলে যায়। ৩২, ৩৩ কিংবা ৩৪ বছর বয়সে ইউরোপের অন্যতম কঠিন লিগে সফল হওয়ার স্বপ্নও দেখে না অনেকে। কিন্তু সেই তালিকায় নাম লেখাতে রাজি নই আমি। মরশুমের প্রতিটি ম্যাচই জিততে চাই।’
আরও কত বছর খেলবেন রোনালদো? কেউ কেউ বলেন, আরও বছর তিনেক। কিন্তু রোনালদোর বক্তব্য, ‘শরীর ফিট এবং খেলার তাগিদ থাকলে আমি ৪৫ বছরেও খেলতে পারি। আসলে, ফুটবল ছাড়া অন্য কোনও কিছু প্রাধান্য পায় না আমার কাছে। প্রেম, বিচ্ছেদ, আবার প্রেম– সবকিছুরই স্বাদ পেয়েছি। কিন্তু পেশার সঙ্গে কখনও মুহূর্তের জন্য আপোস করিনি।’ রোনালদো-যুগ আরও দীর্ঘায়িত হোক। স্বপ্নের তারকার ৩৪ বছর জন্মদিনে এই কামনাই করছেন অনুরাগীরা।