রাজ্য বিজেপির সংগঠনের ভারপ্রাপ্ত প্রাক্তন সাধারণ সম্পাদক এবং আরএসএসের প্রচারক অমলেন্দু চট্টোপাধ্যায় যোগ দিলেন কংগ্রেসে। সোমবার বিধান ভবনে তাঁর হাতে দলের তেরঙা পতাকা তুলে দিয়েছেন প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি সোমেন মিত্র। ছিলেন প্রদেশ কংগ্রেসের সমন্বয় কমিটির চেয়ারম্যান প্রদীপ ভট্টাচার্যও।
গেরুয়া শিবিরের দীর্ঘদিনের নেতা তথা রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘের প্রচারকের কংগ্রেসে যোগদান স্বভাবতই রাজনৈতিক মহলের পারদ চড়িয়েছে। রাজনৈতিক মহলের মতে, এ যেন নদীর উলটো খাতে বওয়া। কিন্তু অনেক প্রদেশ নেতা এটাও বলছেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতি প্রণব মুখোপাধ্যায় যদি নাগপুরে সংঘের সমাবর্তনে যোগ দিতে পারেন তাহলে এ আর এমন কী ব্যাপার!
দীর্ঘদিন রাজ্য বিজেপির সাংগঠনিক সম্পাদকের পদ সামলানোয় বঙ্গ বিজেপির সব হাঁড়ির খবর জানতেন তিনি। দলীয় সংগঠনের কাজেই ব্যস্ত থাকতেন। তারপর তাঁকে পদ থেকে সরিয়ে দেওয়া হয়। তাঁর জায়গায় পদে বসানো হয় তাঁরই সহকারী সুব্রত চট্টোপাধ্যায়কে। দলীয় নেতাদের কেচ্ছা-কেলেঙ্কারির প্রতিবাদ করাতেই পদ খোয়াতে হয়েছিল বলে দাবি করেছিলেন তিনি। তখন থেকেই দলীয় নেতৃত্বের সঙ্গে তাঁর চোরাগোপ্তা সংঘাতের কথা রটছিল। এরপরেই ধর্ষণের অভিযোগে অমলেন্দুবাবুকে গ্রেফতার করেছিল পুলিশ। পরে তিনি জামিনে ছাড়া পান।
সেই ঘটনার অভিযোগকারিণী রাজলক্ষ্মী চৌধুরীও এ দিন এসেছিলেন কংগ্রেস দফতরে। অমলেন্দুবাবুর অভিযোগ, আরএসএসের নানা অনৈতিক কাজকর্ম জেনে ফেলায় সঙ্ঘের মদতে পুষ্ট কিছু ব্যক্তি তাঁর স্ত্রীকে (রাজলক্ষ্মী) ধর্ষণের চেষ্টা করেছিল। এই বিষয়ে তিনি প্রশাসনিক স্তরে অভিযোগও দায়ের করেছেন বলে জানিয়েছেন। যে ঘটনায় অমলেন্দুবাবুর নাম জড়িয়েছিল, তাতে সঙ্ঘ ও বিজেপির চার নেতার বিরুদ্ধে অভিযোগ আছে।
কঠিন সময়ে দলের নেতারা পাশে দাঁড়াননি। এমনকি দীর্ঘদিনের রাজনৈতিক সহযোদ্ধারাও কোথাও কোনও প্রতিবাদ করেননি বলে আক্ষেপ ছিল প্রবীণ সংঘ প্রচারকের। পাশাপাশি সর্বভারতীয় দলেই যোগ দেওয়ার ইচ্ছা ছিল তাঁর। তাই কংগ্রেসে যোগ দিয়েছেন বলে জানান তিনি। অন্যদিকে, কংগ্রেস নেতৃত্ব জানিয়েছেন, অমলেন্দুবাবুকে তাঁরা সংগঠনের কাজে লাগাবেন।