রবিবার সন্ধ্যায় কলকাতা পুলিশ বনাম সিবিআই দ্বৈরথ শুরু হতেই দেশের গণতন্ত্র ও সংবিধান রক্ষা করতে ধর্নায় বসেছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। অবশেষে আজ তিন দিনের মাথায় মহাজোটের অনুরোধ মেনে সত্যাগ্রহ কর্মসূচি প্রত্যাহার করলেন তিনি। তবে ধর্না তোলার পাশাপাশি চন্দ্রবাবু নায়ডুকে পাশে নিয়ে মমতা এ-ও বলেন যে, মোদীর এক নায়কতন্ত্রের প্রতিবাদে আন্দোলন তিনি চালিয়ে যাবেন। আগামী ১৩ এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লীতে ধর্না কর্মসূচি করবেন তিনি। সেই ধর্নায় সামিল হবেন মহাজোটের সব রাজনৈতিক দলগুলি।
প্রসঙ্গত, আজ দুপুরে সুপ্রিম কোর্ট সিবিআই-রাজীব কুমার মামলায় রায়ে জানিয়ে দেয় কলকাতা পুলিশ কমিশনারকে গ্রেফতার করতে পারবে না সিবিআই। এর পরেই নৈতিক জয় হয়ে গিয়েছিল মমতার। কিন্তু তবুও তিনি ধর্না চালিয়ে যাবেন বলেই মনস্থির করেছিলেন। অন্যদিকে, রবিবার রাতে ধর্নায় বসার পরই মুখ্যমন্ত্রীকে ফোন করেছিলেন চন্দ্রবাবু। মঙ্গলবার বিকেলে কলকাতায় পৌঁছেই অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী চলে গিয়েছেন দিদির ধর্নামঞ্চে। সেখানে তিনি মহাজোটের তরফে মমতাকে ধর্না প্রত্যাহার করার অনুরোধ করেন। তাঁর অনুরোধেই সাড়া দিলেন মমতা।
এদিন মমতা জানিয়েছেন, ‘এই ধর্না কোনও রাজনৈতিক ধর্না ছিল না। এটা সত্যাগ্রহ।’ সোমবার সকালেই ধর্নামঞ্চে লেগে গিয়েছিল ব্যানার। ইংরাজি অক্ষরে লেখা ‘সেভ ইন্ডিয়া।’ এ দিন অন্ধ্রপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রীকে পাশে দাঁড় করিয়ে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘দেশ এবং সংবিধান বাঁচাতে আমি এই ধর্ণা শুরু করেছিলাম। বিরোধী দলগুলির পক্ষ থেকে চন্দ্রবাবু আমায় অনুরোধ করেছেন ধর্না তুলে নিতে। তাই আমি প্রত্যাহার করছি।’
এরপরই ধর্মতলার ধর্নামঞ্চ থেকেই মমতা ঘোষণা করে দেন, আগামী ১৩ এবং ১৪ ফেব্রুয়ারি দিল্লীতে ধর্নায় বসবেন। থাকবেন বিজেপি-বিরোধী দলের সমস্ত নেতারা। এদিন মমতা বলেন, ‘এই ধর্ণা গণতন্ত্রের জয়, সংবিধানের জয়।’ সেই সঙ্গে বাংলার মুখ্যমন্ত্রী এ-ও বলেন, ‘ধর্ণা প্রত্যাহার করা হলেও বিজেপি-র প্রতিহিংসার রাজনীতির বিরুদ্ধে লড়াই চলবে।’ অন্যদিকে চন্দ্রবাবু বলেন, ‘গোটা দেশ জুড়ে বিরোধীদের মেরুদণ্ড ভাঙতে বিজেপি কেন্দ্রীয় এজেন্সিকে ব্যবহার করছে। বাংলার ঘটনা তারই অংশ।’