৯,০০০ কোটি টাকার অর্থ জালিয়াতি মামলায় পলাতক ধনকুবের বিজয় মালিয়াকে ভারতে প্রত্যর্পণের সিদ্ধান্ত নিয়ে নিল ব্রিটেন। সোমবার পলাতক এই লিকার ব্যারনের প্রত্যর্পণের নির্দেশে সই করলেন ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্র সচিব। তিনি জানান, ভারতের আবেদন মেনেই এই প্রত্যর্পণের নোটিসে সই করল ব্রিটেন।
এ প্রসঙ্গে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে একটি বিবৃতি পেশ করে জানানো হয়, ‘৩ ফেব্রুয়ারি সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে বিজয় মালিয়াকে ভারতের হাতে তুলে দেওয়ার নির্দেশে সই করেছে সেক্রেটারি অব স্টেট। ভারতে তাঁর নামে অর্থ জালিয়াতির মামলা রয়েছে কয়েক হাজার কোটি টাকার।’
গত ডিসেম্বরেই মালিয়ার প্রত্যর্পণের নির্দেশ দিয়েছে ব্রিটেনের ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এবার তাতে অনুমোদন দিল প্রশাসনও। তবে এখনই মালিয়াকে ফেরানো হবে না। সরকারি নির্দেশের বিরুদ্ধে আবেদন জানানোর জন্য তাঁর হাতে ১৪ দিনের সময় রয়েছে। তার ভিতরে উচ্চ আদালতে বা অন্য কোনও কর্তৃপক্ষের কাছে প্রত্যর্পণের বিরুদ্ধে আবেদন করতে পারেন তিনি।
গতকাল তেমনই ইঙ্গিত দিয়ে মালিয়া টুইট করেন, ‘২০১৮-এর ১০ ডিসেম্বর ওয়েস্টমিনস্টার ম্যাজিস্ট্রেট কোর্ট সিদ্ধান্ত জানানোর পর আমি আপিলের ইচ্ছে প্রকাশ করেছিলাম। কিন্তু স্বরাষ্ট্রসচিবের সিদ্ধান্তের জন্য আপিল করতে পারিনি। এ বার সেটা করব।’
বিজয় মালিয়ার বিরুদ্ধে ৯০০০ কোটি টাকার ঋণ না মিটিয়ে দেশ ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে। তার পর থেকেই তাঁকে ফেরত আনার চেষ্টা করছে ভারতীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলি। দেশে না ফিরলেও, নানা সময়ে নানা অনুষ্ঠানে দেখা গিয়েছে মালিয়াকে। কখনও খেলার মাঠে, কখনও বিয়ের অনুষ্ঠানে। তাঁর বিরুদ্ধে ব্রিটেনের আদালতে একাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে।
প্রসঙ্গত, মালিয়াকে ঘিরে দেশের মাটিতে রাজনৈতিক ঝড়ও কিছু কম হয়নি। বিজেপির দাবি, ঋণ দিয়েছে কংগ্রেসের সরকার। আর কংগ্রেসের অভিযোগ, মালিয়াকে পালিয়ে যেতে সাহায্য করেছে মোদী সরকার। বিতর্কে নয়া মাত্রা যোগ হয় যখন গত বছর জুনে নিজের টুইটার হ্যান্ডেলে মালিয়া লেখেন, নরেন্দ্র মোদী এবং অরুণ জেটলিকে চিঠি দিয়ে বিষয়টি মিটিয়ে নেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন তিনি। তারপর থেকেই অন্য মাত্রা নেয় এই অর্থ জালিয়াতি মামলা।
অন্যদিকে, ১৪ দিনের মধ্যে ব্রিটেনের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের সিদ্ধান্তকে চ্যালেঞ্জ করে মালিয়া আদালতে যান কিনা সেদিকেই এখন নজর সকলের। ব্রিটেনের হাইকোর্টে ফ্রেবুয়ারির ৪ থেকে ১৪ দিনের মধ্যে অর্থাৎ ১৮ তারিখের মধ্যে এই আবেদন করতে হবে৷