লোকসভায় হার নিশ্চিত বুঝতে পেরেই উঠেপড়ে লেগেছে মোদী সরকার। বিরোধীদের ভয় দেখাতে তারা আশ্রয় নিচ্ছে নোংরা রাজনীতির। এমনকি কেউ বিরোধীতা করলেই তার পিছনে লেলিয়ে দেওয়া হচ্ছে সিবিআই, ইডির মতো কেন্দ্রীয় সংস্থাগুলিকে। এই অভিযোগ দেশের প্রায় সবকটি বিরোধী দলেরই। প্রতিহিংসা পরায়ণ কেন্দ্রের এমন নোংরা রাজনীতির প্রতিবাদ করেছেন তৃণমূল নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও। সম্প্রতি প্রযোজক শ্রীকান্ত মোহতাকে গ্রেফতার করার পরই একাধিক টুইট করে সিবিআইকে তীব্র আক্রমণ করেছিলেন তৃণমূল নেত্রী। তিনি বলেছিলেন, ‘মুণ্ডুহীন এজেন্সি এখন মেরুদণ্ডহীন বিজেপিতে পরিণত হয়েছে। অখিলেশ, মায়াবতী কাউকেই বাদ দিচ্ছে না বিজেপি।’ তাঁর সেই অভিযোগকেই সত্যি বলে প্রমাণ করল মোদী সরকার। এবার বিজেপির রাজনৈতিক প্রতিহিংসার শিকার কলকাতার নগরপাল রাজীব কুমার।
সিবিআই সূত্রকে উদ্ধৃত করে শনিবার রাতে এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছিল, চিটফান্ড কাণ্ডে তদন্তের জন্য কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে চাইছে কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। তারপর রাত পোহানোর অপেক্ষা ছিল মাত্র। রবিবার বেলা বাড়ার আগেই মোদী সরকারের বিরুদ্ধে রাজনৈতিক প্রতিহিংসার অভিযোগ তুলে সৎ ও কর্মঠ পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারের পাশে দৃঢ়তার সঙ্গে দাঁড়ালেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। বললেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা আধিকারিক কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তাঁর সততা, নিষ্ঠা এবং সাহস প্রশ্নাতীত।’
প্রসঙ্গত, চিটফান্ড কাণ্ডে তদন্তের জন্য রাজ্য সরকার যে স্পেশাল ইনভেস্টিগেটিং টিম গঠন করেছিল, তার নেতৃত্বে ছিলেন রাজীব কুমার। পরবর্তীকালে সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশে চিটফান্ড কেলেঙ্কারির তদন্ত ভার নেয় সিবিআই। এরপর থেকেই নানাভাবে রাজ্যের শাসক দলকে বেকায়দায় ফেলায় চেষ্টা করছে ওই কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। যেহেতু রাজীব ছিলেন রাজ্যের ইনভেস্টিগেটিং টিমের প্রধান, তাই তাঁকেই জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ডেকে রাজ্য সরকারের ভাবমূর্তি নষ্ট করতে চাইছে
সিবিআই, এমনটাই মনে করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশ।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমটির প্রতিবেদনের দাবি, গত ৩ দিন ধরে বেপাত্তা রাজীব কুমার। এ প্রসঙ্গে আজ রবিবার সকালে একটি
টুইট করে মমতা লেখেন, ‘চরম প্রতিহিংসার রাজনীতি করছে বিজেপির শীর্ষ নেতৃত্ব। শুধুমাত্র রাজনৈতিক দলগুলিকেই নিশানা করছে না তারা, ক্ষমতার অপব্যবহার করে পুলিশকেও নিয়ন্ত্রণ করতে চাইছে। সঙ্গে সাংবিধানিক প্রাতিষ্ঠানগুলিকে ধ্বংস করে দেওয়ার চেষ্টা চালাচ্ছে। আমরা এর তীব্র নিন্দা করছি।’ তিনি স্পষ্ট জানিয়ে দেন, ‘বিশ্বের অন্যতম সেরা আধিকারিক হলেন কলকাতার পুলিশ কমিশনার। তাঁর সততা, নিষ্ঠা এবং সাহস প্রশ্নাতীত। দিবারাত্র কাজ করছেন তিনি। অতিসম্প্রতি একদিন ছুটি নিয়েছিলেন। মিথ্যা যতই রটাও সেটা মিথ্যাই থাকবে।’
মুখ্যমন্ত্রীর পাশাপাশি কলকাতা পুলিশের তরফেও রবিবার সকালে একটি বিবৃতি দেওয়া হয়েছে। তাতে বলা হয়েছে, শুধু মাত্র এক দিন তথা ৩১ জানুয়ারি পুলিশ কমিশনার ছুটিতে ছিলেন। এ ব্যাপারে ভিত্তিহীন কোনও প্রতিবেদন কেউ প্রকাশ করলে, কলকাতা পুলিশের মানহানির জন্য তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়ে দেওয়া হয় লালবাজারের তরফে।