টানা ৩ বছর মামলা চলার পর অবশেষে রেড রোডে বায়ুসেনাকর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালনায় দোষী সাব্যস্ত হল সাম্বিয়া সোহরাব। অনিচ্ছাকৃত খুনের মামলা থেকে রেহাই মিললেও ৩০৪এ ধারায় অভিযুক্ত সাম্বিয়ার সর্বোচ্চ সাজা হওয়ার কথা ২ বছরের কারাদন্ড, সঙ্গে ১ লক্ষ ১০ হাজার টাকা জরিমানা। যেহেতু ইতিমধ্যেই ২ বছর সংশোধনাগারে থেকেছে সে, তাই জরিমানার টাকা দেওয়ার পরই তার মুক্তি পাওয়ার সম্ভাবনা। আজ ব্যাঙ্কশাল আদালতে এই মামলার রায়ে বেকসুর খালাস হয়েছে সাম্বিয়ার দুই সঙ্গী সোনু, জনি।
২০১৬ সালে ১৩ জানুয়ারির ঘটনা। বেপরোয়াভাবে গাড়ি চালানোর ফলে ব্যারিকেড ভেঙে প্রচণ্ড গতিতে রেড রোডে ঢুকে পড়েছিল অডি গাড়িটি। পালানোর রাস্তা না পেয়ে গাড়ি ঘুরিয়ে নিয়েছিল চালক সাম্বিয়া সোহরাব। গতি আরও বাড়িয়ে সাধারণতন্ত্র দিবসের মহড়া চলাকালীন ধাক্কা দিয়েছিল বায়ুসেনাকর্মী অভিমন্যু গৌড়কে। সেই ধাক্কায় প্রায় কুড়ি ফুট দূরে ছিটকে পড়েছিলেন অভিমন্যু। মৃত্যু হয়েছিল তাঁর। এছাড়া ঘটনায় আহত হয়েছিলেন আরও এক বায়ুসেনা আধিকারিক। এই ঘটনার পর সেদিন চালকের আসনে বসে থাকা মূল অভিযুক্ত রাজনৈতিক নেতা মহম্মদ সোহরাবের ছেলে সাম্বিয়ার ঠাঁই হয় প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগারে।
পুলিশ ও আদালত সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ৩ জানুয়ারি থেকে শুরু করে এই বছরের ১৭ জানুয়ারি পর্যন্ত রেড রোডে বায়ুসেনাকর্মীর মৃত্যু মামলার শুনানি চলে ব্যাংকশাল আদালতে। টানা ১ বছর ১৪ দিন ধরে শুনানিতে ৫১ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ করা হয়। পুলিশের মতে, অত্যন্ত অল্প সময়ের মধ্যে এত বড় মামলার রায় ঘোষণা হল। এই মামলার মূল অভিযুক্ত তৌসিফ সোহরাব ওরফে সাম্বিয়ার বিরুদ্ধে ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ ও ৩০৭ ধারায় খুন ও খুনের চেষ্টা এবং ১৯৪ বাই ১১৫ মোটর ভেহিক্যালস আইনে পর্যাপ্ত কাগজপত্র ছাড়া গাড়ি চালানোর অভিযোগ আনা হয়।
পাশাপাশি সাম্বিয়ার দুই সঙ্গী নুর আলম ওরফে জনি এবং শাহনওয়াজ খান ওরফে শানুর বিরুদ্ধে রয়েছে ২১২ ধারায় অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়া ও ২০১ ধারায় প্রমাণ লোপাট, ১২০বি ধারায় ষড়যন্ত্রের অভিযোগ। অভিযুক্ত শানু বউবাজার বিস্ফোরণ মামলার মূল চক্রী রশিদ খানের নাতি। এ ছাড়াও সাম্বিয়ার বাবা মহম্মদ সোহরাবের বিরুদ্ধেও রয়েছে অপরাধীকে আশ্রয় দেওয়ার অভিযোগ। সাম্বিয়া ছাড়া বাকি অভিযুক্তরা জামিনে মুক্ত ছিল। যদিও হাই কোর্টের নির্দেশে তাদের বিরুদ্ধে ফের ধারা প্রয়োগ করা হয়। আজ আদালত যথাযথ তথ্যপ্রমাণের অভাবে তাদের বেকসুর খালাস করে দিয়েছে।