বাংলার মানুষকে আর সরকারি গ্রন্থাগারের সদস্য হওয়ার জন্য কোনও ফি দিতে হবে না। গ্রন্থাগার পরিষেবা একেবারে নিঃশুল্ক করে দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বাধীন রাজ্য সরকার। এতদিন কেবল শিশু সদস্যদের এই সুবিধা দিত সরকার। এবার ১৮ বছরের বেশী বয়সের সব সদস্যই এই সুযোগ পেতে চলেছে।
সরকারের প্রাথমিক হিসেব অনুযায়ী প্রায় এক কোটি বই পড়ুয়া নতুন করে নিখরচায় ফি বছর সরকারি গ্রন্থাগার ব্যবহারের সুযোগ পাবে। বর্তমানে ১৮ বছরের কম বয়সের প্রায় ৩৫ লক্ষ শিশু পড়ুয়া এই সুবিধা পায়। মুখ্যমন্ত্রী চান, গ্রাম ও শহরের যত বেশী মানুষ গ্রন্থাগার থেকে বই পড়ার সুযোগ নিয়ে নিজেদের শিক্ষিত করুক। এজন্য গ্রন্থাগার দপ্তর বেশ কিছু উদ্যোগও গ্রহণ করেছে। সদস্য ফি ছাড় দেওয়ার সিদ্ধান্ত সেই পরিকল্পনাগুলিরই অন্যতম। এ ব্যাপারে আগামী সপ্তাহেই সরকারি আদেশ বের করা হবে।
গ্রন্থাগারের দায়িত্বপ্রাপ্ত জনশিক্ষা প্রসার দপ্তরের মন্ত্রী জানান, বেসরকারি ও সরকার পোষিত গ্রন্থাগারগুলির উন্নয়নের জন্য এতদিন ১০ থেকে ৩০ হাজার টাকা পর্যন্ত দেওয়া হত। এবার থেকে তা বাড়িয়ে ৫০ হাজার টাকা করা হচ্ছে। এজন্য চলতি আর্থিক বছরেই ছ’কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। দফায় দফায় রাজ্যের দু’হাজার এই ধরনের গ্রন্থাগারকে ওই সুযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা রয়েছে।
উল্লেখ্য, কলকাতার রাজ্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে ইতিমধ্যে ৩৫ হাজার বইয়ের ডিজিটাইজেশন প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে। এবার জেলা গ্রন্থাগারের ক্ষেত্রেও সেই প্রক্রিয়া শুরু করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়া যাদের বাড়িতে পড়ার সঠিক পরিবেশ নেই, তাদের জন্য কেন্দ্রীয় গ্রন্থাগারে তৈরী করা হয়েছে অনেক বুক কর্নার। আইএএস-ডব্লুবিসিএস পরীক্ষার প্রস্তুতিতে ইচ্ছুক পড়ুয়াদের গাইড করার জন্য কেন্দ্রীয় বা জেলা গ্রন্থাগারে বিশেষ কোচিং সেশনের বন্দোবস্তও করা হয়েছে। এজন্য জেলাশাসকদের ব্যক্তিগতভাবে উদ্যোগ গ্রহণের নির্দেশও দেওয়া হয়েছে।