পরিকল্পনা মতোই নতুন বছরের গোড়া থেকে শুরু হয়ে গেল ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর এসপ্ল্যানেড থেকে শিয়ালদহমুখী টানেল কাটার কাজ। কলকাতা মেট্রো রেল কর্পোরেশন লিমিটেড (কেএমআরসিএল) সূত্রে জানা গেছে, শুক্রবার থেকে একটি টানেল কাটার কাজ শুরু হয়েছে। দ্বিতীয় টানেল কাটার কাজও আগামী কিছু দিনের মধ্যেই শুরু হয়ে যাবে।
কেএমআরসিএল-এর ওই সূত্র আরও জানাচ্ছে, সংস্থার ইঞ্জিনিয়ারদের পরিকল্পনা ছিল, নতুন বছরের একেবারে প্রথম থেকেই শিয়ালদহমুখী টানেল কাটার কাজ শুরু করা হবে। কিন্তু, সেই পরিকল্পনায় কিছুটা বদল আনতে হচ্ছে ইস্পাতের বিম সরানোর কাজের জন্য। সমীক্ষার সময়ে প্রস্তাবিত টানেলের পথে বর্তমান মেট্রোর ইস্পাতের ন’টি বিমের অস্তিত্ব ধরা পড়েছিল। কিন্তু সেই বিম কাটার কাজ শুরু হতেই পরবর্তী সময়ে নতুন নতুন বিমের সন্ধান পাওয়া গিয়েছে। সেগুলি কেটে সরাতে অনেকটা সময় ব্যয় হয়েছে।
এসপ্ল্যানেড থেকে শুরু করে শিয়ালদহ পর্যন্ত টানেল শেষ করতে ১৮ মাস সময় লাগতে পারে বলে জানিয়েছেন সংস্থার ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের বক্তব্য, এসপ্ল্যানেড থেকে টানেল কাটার জেরে মাটির উপরে যাতে কোনও প্রভাব না পড়ে, তার জন্য একগুচ্ছ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। সব দিক মাথায় রেখে কাজ করা হবে। এবং এই পর্বে প্রায় ২০০ থেকে ২৫০টি বিল্ডিংয়ের বিশেষ সুরক্ষার ব্যবস্থা করা হবে।
এই মেট্রো পথের প্রথম পর্যায়ে ট্রেন চলাচলের সূচনা হবে সল্টলেক সেক্টর ফাইভ থেকে স্টেডিয়াম পর্যন্ত। এই পর্বে মোট ছ’টি স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। সেগুলি হল, সেক্টর ফাইভ, করুণাময়ী, সেন্ট্রাল পার্ক, সিটি সেন্টার, বেঙ্গল কেমিক্যাল এবং স্টেডিয়াম। ইতিমধ্যেই অত্যাধুনিক রেকের ট্রায়াল রান দেওয়া হয়েছে। রিসার্চ ডিজাইনস অ্যান্ড স্ট্যান্ডার্ডস অর্গানাইজেশন (আরডিএসও)-এর ইঞ্জিনিয়ারদের তত্ত্বাবধানে চলে রেকগুলির ‘লোড ট্রায়াল’।
এ প্রসঙ্গে এক কর্তা বলেন, সর্বোচ্চ গতিতে ছুটেও সেই ভার বহনে ট্রেনগুলি কতটা সক্ষম, তা দেখে নেওয়া অত্যন্ত জরুরি ছিল। আরডিএসও-র ইঞ্জিনিয়ারদের তত্ত্বাবধানে সেই কাজটি হয়। ভার বহনের পরীক্ষায় ট্রেনে ভরা হয়েছিল বস্তা বস্তা বালি। সেই পরীক্ষার ইতিবাচক রিপোর্ট দিয়েছে আরডিএসও। বর্তমানে প্রথম পর্যায়ের ট্রেন চালানোর জন্য সিগন্যালিং সহ বাকি কাজ করা হচ্ছে। তারপরই বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালাতে কমিশনার অব রেলওয়ে সেফটির অনুমোদনের জন্য আবেদন করা হবে। সেই অনুমোদন পেলে বাণিজ্যিকভাবে ট্রেন চালাতে আর কোনও বাধা থাকবে না।