ক্লাব বদলালেও কলকাতা ডার্বিতে নিজের ট্র্যাক রেকর্ড বদলাতে পারলেন না খালিদ জামিল। অন্যদিকে আই লিগের দুটি ম্যাচেই চিরপ্রতিদ্বন্দ্বী ক্লাবের বিরুদ্ধে দলকে মধুর জয় এনে দিলেন ইস্টবেঙ্গলের স্প্যানিশ কোচ আলেজান্দ্রো। প্রথম ডার্বিতে ৩-২ গোলে জয়ের পর রবিবাসরীয় ফিরতি লেগে মোহনবাগানকে ২-০ গোলে হারাল ইস্টবেঙ্গল।
আজকের ডার্বির নায়ক সেই জবি জাস্টিন। কোলাডোকে দিয়ে এক গোল করিয়ে এবং নিজে একগোল করে ম্যাচের সেরা হলেন আই এম বিজয়নের ভক্ত। আর সোনি! নাহ এবার আর দলের হার রুখতে পারলেন না হাইতিয়ান সুপারস্টার। তিনি মাঠে থাকলে মোহনবাগান কখনও ডার্বি হারেনি। কিন্তু এদিন পুরো ৯০ মিনিট মাঠে থেকেও দলের হার রুখতে পারলেন না ম্যাজিশিয়ান।
প্রথমার্ধের শুরু থেকেই দু’দল আক্রমণ–প্রতিআক্রমণে খেলা শুরু করে। তবে কেউই সেভাবে সুযোগ তৈরি করতে পারেনি। ফিরতি ডার্বির শুরুটা তেড়েফুঁড়ে করলেও সময় গড়ানোর সঙ্গে সঙ্গে মাঝমাঠে লাল-হলুদের কাছে ক্রমশ পিছু হটতে থাকে বাগান। উইং ধরে সনি নর্ডির দৌড় কয়েকবার বিভ্রান্ত করলেও চুলোভার কাছে বারবার আটকে গেলেন হাইতিয়ান ম্যাজিশিয়ন। সেইসঙ্গে আটকে গেল মোহনবাগানও।
ম্যাচের ১৯ মিনিটে বাগান গোলরক্ষক এবং ডিফেন্ডারদের মধ্যে ভুল বোঝাবুঝির কারণে প্রায় গোল করার মতো পরিস্থিতিতে চলে গিয়েছিলেন জবি। তবে সবুজ–মেরুনের ভাগ্য ভাল তা থেকে গোল হয়নি। ৩০ মিনিটের মাথায় সোনি নর্ডির গোলমুখী শট লাল–হলুদের ডিফেন্ডারের গায়ে লেগে ফিরে আসে। ৩৪ মিনিটেই অবশ্য কাঙ্খিত গোলটি পেয়ে যায় ইস্টবেঙ্গল। রক্ষণ থেকে ভেসে আসা লম্বা থ্রু ধরে কিংসলে বোকা বানিয়ে পেনাল্টি বক্সে ঢুকে পড়েন জবি। এরপর বুদ্ধিমত্তার পরিচয় দিয়ে পাস দেন ফাঁকায় দাঁড়িয়ে থাকা কোলাডোকে। যা থেকে ঠাণ্ডা মাথায় আগুয়ান গোলরক্ষকের পাশ থেকে বলটি জালে জড়ান স্প্যানিশ খেলোয়াড়টি। এরপর প্রথমার্ধের শেষে ১–০ গোলেই এগিয়ে ছিল ইস্টবেঙ্গল।
এক গোলে পিছিয়ে থেকে দ্বিতীয়ার্ধে ম্যাচে ফেরার আপ্রাণ চেষ্টা করে সবুজ-মেরুন। ৫৩ মিনিটে কর্ণার থেকে কিংসলের হেড পোস্টে লেগে প্রতিহত হলে ফিরতি বল জালে ঠেলেন দিপান্দা ডিকা। কিন্তু গোলে ঢোকার মুখে বল ক্যালডেইরার হাতে লাগায় বাতিল হয় সেই গোল। এই সময় লাল-হলুদ ডিফেন্সকে কিছুটা চাপে ফেলার চেষ্টা করলেও বোরহা-অ্যাকোস্টাদের টপকে কাজের কাজ করে উঠতে পারেনি সবুজ-মেরুন স্ট্রাইকাররা।
উল্টে ৭৫ মিনিটে সেটপিস থেকে দ্বিতীয় গোল করে ম্যাচে পুরোপুরি কব্জা করে নেয় ইস্টবেঙ্গল। অধিনায়ক লালরিনডিকার পিন পয়েন্ট কর্ণার থেকে দুরন্ত হেডারে লিগের অষ্টম গোলটি তুলে নেন জবি। ওখানেই নিশ্চিত হয়ে যায় ইস্টবেঙ্গলের জয়। অ্যাসিস্টের পাশাপাশি গোল করে ম্যাচের সেরা জবিই। আর ১৫ বছর বাদে আই লিগের দুটি ডার্বিতেই বাগানকে হারিয়ে ফের চ্যাম্পিয়নশিপের লড়াইয়ে ফিরে এল আলেজান্দ্রোর দল। ১৩ ম্যাচে ২৫ পয়েন্ট নিয়ে এই মুহূর্তে চার নম্বরে তারা।
আই লিগের প্রথম ডার্বিতে মোহনবাগানের কোচ ছিলেন শঙ্করলাল চক্রবর্তী। এবার কোচ খালিদ জামিল। কিন্তু কোচ বদল করেও ভাগ্য ফেরাতে পারল না সবুজ মেরুন।