সরকারের কাছে দল কিংবা নাগরিকদের কোনও বিভেদ নেই।যাবতীয় ভেদাভেদ ভুলে ঐক্যবদ্ধভাবে এগিয়ে যেতে হবে। এই ভাষাতেই দেশে জাতীয় ঐক্যের আহ্বান জানালেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। হাসিনা বলেন, সরকার সবার জন্য। তাঁর ভাষণে বিগত ১০ বছরে দেশের আর্থিক উন্নয়নের চিত্রও তুলে ধরেন তিনি।
প্রসঙ্গত, চতুর্থ দফায় সরকার গঠন এবং প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ক্ষমতা গ্রহণের পর শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে প্রথম ভাষণ দিলেন হাসিনা৷ ওইদিন সংসদের কথাও উঠে আসে তাঁর ভাষণে। তিনি বলেন, জাতীয় সংসদে বিরোধীদলের সদস্য সংখ্যা অনেকটাই কম। তবে তাদের সংখ্যা যতই কম হোক না কেন, যে কোনও সদস্যের যৌক্তিক প্রস্তাব, যথাযত বিবেচনা করা হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। দেশে দুর্নীতি প্রতিরোধ, মাদক এবং জঙ্গিদের বিরুদ্ধেও কড়া বার্তা দেন প্রধানমন্ত্রী। জঙ্গিদের বিরুদ্ধে বার্তা দিতে গিয়ে তিনি বলেন, ইসলামে সন্ত্রাসের কোনও স্থান নেই।
পাশাপাশি, ভারতের সাধারণতন্ত্র দিবস উপলক্ষ্যে দেশবাসী ও প্রধানমন্ত্রীর নরেন্দ্র মোদীকে আগাম শুভেচ্ছাবার্তাও জানিয়েছেন বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী। তাঁর আশ্বাস, আগামী দিনে বিভিন্ন ক্ষেত্রে নয়াদিল্লীর সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখবে ঢাকা৷ শুক্রবার মুজিব-কন্যা বলেন, ‘ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে এখন চমৎকার সম্পর্ক রয়েছে। ভারত শুধু বাংলাদেশের ঘনিষ্ঠ প্রতিবেশীই নয়, দু’দেশের সংস্কৃতি, ঐতিহ্য ও ইতিহাসে সর্বাধিক মিল রয়েছে। আগামী দিনেও এই দুই দেশের প্রগতি ও উন্নয়নের ধারা আরও শক্তিশালী হবে।’
বক্তব্যের সমাপ্তিতে কবি সুকান্ত ভট্টাচার্যর কবিতার লাইন উদ্ধৃত করে ভবিষ্যৎ প্রজন্মের উন্নতি ও অগ্রগতির কথা বলেন তিনি। হাসিনা বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় দায়িত্ব শিক্ষিত তরুণদের জন্য কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা। তরুণদের কর্মসংস্থানের জন্য আমরা বিশেষ পরিকল্পনা গ্রহণ করেছি। তরুণ ব্যবসাদারদের সহজ শর্তে আর্থিক সহায়তা প্রদান করবে সরকার৷ এছাড়া মহিলা ব্যবসায়ীদেরও বিশেষ সুবিধা প্রদান করা হবে৷ সরকারি উদ্যোগে কর্মসংস্থানের পরিকল্পনা করছে সরকার৷ তরুণ উদ্যোক্তাদের আন্তর্জাতিক স্তরে পেটেন্ট করার উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে৷’ এ প্রসঙ্গে দেশে বিদেশি বিনিয়োগ, এক্সপ্রেসওয়ে, পদ্মা সেতু, রেলসেতু, পারমানবিক বিদ্যুৎ প্রকল্পের কথা উল্লেখ করেছেন তিনি।
হাসিনা আরও জানান, দক্ষ কর্মী গড়ে তোলার জন্য প্রতিটি উপজেলায় একটি করে কারিগরি কলেজ স্থাপন করবে সরকার। তাঁর কথায়, ‘আগামী পাঁচ বছরে আমরা দেড় কোটি কর্মসংস্থানের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছি। বাংলাদেশকে উন্নত রাষ্ট্রে পরিণত করতে সামনে আরও কঠিন পথ পাড়ি দিতে হবে৷’ একইসঙ্গে পাশাপাশি, চতুর্থবার আওয়ামি লিগকে ক্ষমতায় আনার জন্য দেশবাসীকে ধন্যবাদ জানিয়েছেন মুজিব-কন্যা।