সেই নেতাকে তিনি কখনওই মানেন না, যিনি দেশভাগ করতে চান, মানুষে মানুষে বিভাজন আনতে চান। নেতাজির জন্মজয়ন্তীতে দার্জিলিং ম্যালের মঞ্চ থেকে এভাবেই নাম না করে নরেন্দ্র মোদীকে বিঁধলেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। একই সঙ্গে তাঁর ঘোষণা, ‘যারা দেশ ভাঙার চেষ্টা করবে তাদের আটকে দেব’।
নেতাজির ১২৩ তম জন্মদিনে রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে মমতা বলেন, ‘যিনি মানুষে মানুষে ভাগ করেন, বিদ্বেষ ছড়ান, তিনি দেশের নেতা নন। দেশের নেতা তাঁকেই মানি, যিনি ধর্ম, বর্ণ, জাতি নির্বিশেষে সকলকে নিয়ে চলতে পারেন। দেশকে ভাগ নয়, জুড়ে রাখতে পারেন। সেটাই নেতাজি বলেছিলেন। নেতাজির ডানহাত ছিলেন শাহনওয়াজ খান’। মমতার কথায়, ‘দেশের নেতা হিসাবে তাঁদেরই মানি, যারা জন্মভূমিকে ভালবেসে প্রাণ দিয়েছেন, শহীদ হয়েছেন’।
স্বাধীনতার ৭২ বছর পরেও নেতাজিকে নিয়ে আড়াল-আবডাল করার রাজনৈতিক খেলায় আমবাঙালির মতো ক্ষুব্ধ মমতাও। ম্যালের মঞ্চে সেই ক্ষোভ উগড়ে দিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ‘নেতাজির অন্তর্ধান রহস্যের কিনারা আজও হল না। এটা লজ্জার বিষয়, দুঃখেরও। কিছুই জানতে পারল না দেশবাসী’। প্রশ্ন তোলেন, ‘দেশের এই মহান সন্তানের জন্মদিনে রাজ্যে ছুটি থাকলেও, কেন জাতীয় ছুটি হবে না’? মমতার কথায়, ‘বারবার দাবি জানানো স্বত্বেও কেন্দ্রের হুঁশ নেই। কিন্তু সময় এসেছে। দেশের স্বার্থে বাংলা সব সময় এগিয়ে ছিল, এখনও আছে। তারপর বলেন, ‘একটু ধৈর্য ধরুন, ফের পাল্টানোর সময় এসেছে’।
রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের একাংশের মতে, মালদহে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহ বারবার ‘সুভাষবাবু’র প্রসঙ্গ উত্থাপন করেছেন। অভিযোগ করেছেন, কংগ্রেস তাঁকে প্রাপ্য সম্মান দেয়নি। শাহের সেই মন্তব্যের মোকাবিলাতেই সাম্প্রাদায়িকতার প্রসঙ্গে নেতাজির কথা উল্লেখ করে বিজেপিকে একহাত নিয়েছেন মমতা। পাল্টা আক্রমণ করে মমতা বলেন, ‘আসলে ওরা নেতাজিকে রাষ্ট্রনায়ক হিসাবে মানে না। তাই নেতাজির জন্মদিনে জাতীয় ছুটি দেয়নি ওরা’।