সাড়ে চার মাস আগেই লালকুঠিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার নির্দেশ দিয়ে গিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। আর এবারের উত্তরবঙ্গ সফরে যেতেই তাঁর হাতে পাহাড়ের উন্নয়ন রিপোর্ট দিল বিশেষ কমিটি। মঙ্গলবার রিচমন্ড হিলে জিটিএ কর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর হাতে সেই রিপোর্ট তুলে দেন কমিটির চেয়ারম্যান তথা দার্জিলিঙের মোর্চা বিধায়ক অমর সিং রাই। গতকালের বৈঠকে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে জিটিএ-র বেশ কিছু উন্নয়ন প্রকল্প নিয়েও আলোচনা হয়। বৈঠক শেষে বিনয় তামাং বলেন, ‘পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে সদর্থক আলোচনা হয়েছে।’
মঙ্গলবার সকালে প্রাতঃভ্রমণে বেরিয়ে হাঁটতে হাঁটতে জিটিএর সদর দফতর লালকুঠিতে পৌঁছে যান মুখ্যমন্ত্রী। জানুয়ারির কনকনে ঠাণ্ডাতেও তাঁর গায়ে কালো রঙের সোয়েটার আর শাল। পায়ে ট্রেডমার্ক সাদা হাওয়াই চপ্পল। নিরাপত্তারক্ষী এবং পুলিশ আধিকারিকদের নিয়ে হেঁটেই তিনি রিচমন্ড হিল থেকে পৌঁছে যান প্রায় পাঁচ কিলোমিটার দূরে লালকুঠিতে। আগে থেকেই সেখানে হাজির ছিলেন জিটিএ চেয়ারম্যান বিনয় তামাং, ভাইস চেয়ারম্যান অনীত থাপা প্রমুখ। পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, এদিন মুখ্যমন্ত্রী সকালে প্রায় ১২ কিলোমিটারের বেশি পথ হেঁটেছেন।
লালকুঠি চত্বর ঘুরে এলাকাটি সাজিয়ে তােলার জন্য তিনি জিটিএ-র প্রধান সচিবকে নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। লালকুঠি এলাকায় পর্যটন-গন্তব্য করে গড়ে তোলার কথা আগে বলেছেন মুখ্যমন্ত্রী। জিটিএ সূত্রের খবর, লালকুঠি এলাকা আলো দিয়ে সাজানো, রাস্তার পাশে বেঞ্চ বসানোর নির্দেশ দিয়েছেন তিনি। বিকেলে জিটিএ-র সঙ্গে বৈঠকেও পাহাড়ের উন্নয়ন নিয়ে আলোচনা হয়। কোথায় কী ধরনের কাজ হতে পারে, তা জানতে চান মুখ্যমন্ত্রী। পাহাড়ে স্বল্পমেয়াদি, মধ্যমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন পরিকল্পনা নিয়ে ছ’মাসের মধ্যে রিপোর্ট দাখিল করার নির্দেশ দেন তিনি।
উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন দফতর নির্মিত মাটিগাড়ায় পাহাড়িয়া ভবনটি এতদিন ফাঁকাই পড়ে আছে জেনে ভবনটিকে পাহাড় থেকে শিলিগুড়িতে চিকিৎসার জন্য যাওয়া লোকজন ও পাহাড়ের পড়ুয়াদের থাকার জন্য মুখ্যমন্ত্রীর কাছে চেয়েছিলেন বিনয়। মুখ্যমন্ত্রী শিলিগুড়ির ওই ভবনটি জিটিএ-র হাতে তুলে দিতে সম্মত হয়েছেন বলে জানা গেছে। বিনয় বলেন, গত ৩০ বছরে দার্জিলিং, কালিম্পঙে যে উন্নয়ন হয়নি, মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে তা সম্ভব হয়েছে। এমনটা আর পাঁচ-দশ বছর চলে দার্জিলিঙের চেহারাই বদলে যাবে বলে দাবি করেন বিনয়। সেইসঙ্গে তিনি জানান, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে লালকুঠিকে পর্যটন কেন্দ্র হিসাবে গড়ে তোলার জন্য সমস্ত পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। এখানে রিসর্ট তৈরি করা হবে।