একটি বিখ্যাত বাংলা ব্যান্ডের গান ছিল, ‘বন্ধু তোমায় এ গান শোনাব বিকেল বেলা’। কিন্তু গান শোনানো কিংবা নির্ভেজাল আড্ডা দেওয়ার মতো বন্ধুর সংখ্যা কি এখন নেহাতই হাতেগোনা নয়? বর্তমান সময়ে দাঁড়িয়ে কি ক্রমশই হারিয়ে যাচ্ছে স্কুল-কলেজ বা ছোটবেলার বন্ধুরা? এই সোশ্যাল মিডিয়ার যুগে মানুষ কি আদতে হয়ে পড়ছে একা, নিঃসঙ্গ? বাস্তবের ‘বন্ধু’ নাকি ‘ভার্চুয়াল ফ্রেন্ড’, কে এখন আপন? এই সমস্ত প্রশ্নের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ‘বন্ধু’ নিয়ে হতে চলেছে এক অভিনব মেলা। আয়োজনে ‘নিক্বণ’ নামে একটি সামজিক সংগঠন।
ওই সংগঠনের সদস্যরা বিশ্বাস করেন, বিশ্ব জুড়ে যে প্রবল হানাহানি, অবিশ্বাস, শত্রুতা চলছে, তাকে একমাত্র রুখতে পারে বন্ধুতাই। তাই এবারের নিক্বণ সাংস্কৃতিক মেলা ’১৯-এর বিষয় ‘লোকসংস্কৃতিতে বন্ধু’। মেলা বসছে বালিতে, দুর্গাপুর তরুণ দলের মাঠে। মেলা চলবে ২৪ থেকে ২৭ জানুয়ারি, দুপুর ১টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত।
এ বছর ১৫ বছরে পা দিচ্ছে নিক্বণ সাংস্কৃতিক মেলা। এবারও শঙ্খ ঘোষের অভিভাবকত্বেই হচ্ছে সব আয়োজন। থিম অনুযায়ী সেজেছে মেলার মাঠ। মঞ্চ থেকে মূল ফটক, সবেতেই ফুটে উঠছে বন্ধুত্বের প্রয়োজন ও মহিমা। থাকছে স্কুলপড়ুয়াদের প্রদর্শনী, যেখানে বন্ধুত্বের নানা দিক নিয়ে দর্শকদের বোঝাবে ছোটরা। মেলার সব অনুষ্ঠানও তাই বন্ধুত্ব কেন্দ্রিক।
দেশের নানা প্রান্ত থেকে বিভিন্ন লোক ও শাস্ত্রীয় নৃত্যের দল তো আসছেই, থাকছে রাজ্যের নানা প্রান্তের লোক-দলও। সব নাচগানেরই মূল বিষয় বন্ধুত্ব। থাকছে নিক্কণের নিজস্ব নৃত্যনাটক ‘বন্ধু, তোমার জন্য’-ও। রচনা ও নির্দেশনায় নিক্বণ সম্পাদক পার্থ নাগ। থাকবে বন্ধুত্ব নিয়ে নিক্বণ কয়্যারের গান। এর পাশাপাশি বন্ধুত্ব নিয়ে থাকবে প্রচুর ছবি ও লেখাও। আদিম যুগ থেকে বন্ধুত্বের বিবর্তন, চিঠি থেকে ফেসবুক— সবই ধরা থাকবে চার দিনের ওই মেলায়।
পার্থবাবু জানান, ‘আমরা যে শুধুমাত্র নানা রাজ্যের দল এনেই পরস্পরের দিকে বন্ধুত্বের হাত বাড়িয়ে দিচ্ছি তা নয়। নানা ধর্মের মানুষজনকেও একত্র করে আমরা দিতে চাইছি মৈত্রীর বার্তাও।’