আগামী মাস, অর্থাৎ ফেব্রুয়ারির ৭ এবং ৮ তারিখে বিশ্ববাংলা কনভেনশন সেন্টারে বসতে চলেছে এবারের রাজ্য শিল্প সম্মেলনের আসর। জানা গেছে, বিনিয়োগ টানার ওই সামিটে এবার রাজ্য সরকার অন্যান্য সেক্টরের পাশাপাশি কৃষিজ শিল্পের ওপরও বিশেষ গুরুত্ব দিতে চায়। আলাদা করে উৎপাদন শিল্পের ওপর গুরুত্ব না দিলেও, এবার বিশেষ ফোকাস হিসেবে রাখা হয়েছে তথ্যপ্রযুক্তি, ছোট শিল্প, পরিবহণ, আতিথেয়তা ও পর্যটন এবং পরিকাঠামো শিল্পকে।
গত বছর বেঙ্গল গ্লোবাল বিজনেস সামিট থেকে রাজ্য সরকার বিনিয়োগ প্রস্তাব পেয়েছিল ২ লক্ষ ১৯ হাজার ৯২৫ কোটি টাকার। সেইবার অবশ্য বিনিয়োগ প্রস্তাবের সিংহভাগ দখলে রেখেছিল উৎপাদন ও নির্মাণ শিল্প। সেই অঙ্ক ছিল ১ লক্ষ ৫৬ হাজার ৮১১ কোটি টাকা। এর পরই ছিল ছোট ও মাঝারি শিল্প। সেখানে ৫২ হাজার ৯৫২ কোটি টাকা বিনিয়োগের প্রস্তাব আসে। কিন্তু খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ, মৎস্য এবং প্রাণিসম্পদ বিকাশের মতো ক্ষেত্রগুলি মিলিয়ে সামগ্রিক বিনিয়োগ প্রস্তাব ছিল ১ হাজার ৫১৮ কোটি টাকার। এবার এই ক্ষেত্রেও বিনিয়োগ টানতে কৃষিজ শিল্পের ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য।
রাজ্যের দাবি, ধান উৎপাদনে যেমন বাংলা দেশের সেরা, তেমনই মাছের চারা উৎপাদনে শীর্ষ রাজ্য। অন্যদিকে, আলু এবং খাওয়ার যোগ্য মাছ উৎপাদনে দু’নম্বর স্থানে রয়েছে বাংলা। এখানকার আম, লিচুর পাশাপাশি পাট এবং চা উৎপাদনও নজরকাড়া। এইসব ক্ষেত্রগুলিকেই যদি শিল্পের জন্য আরও উপযুক্ত করা যায়, তাহলে তা কর্মসংস্থানের রাস্তা খুলতে সাহায্য করবে অনেক বেশি, দাবি সরকারের। এর পাশাপাশি ডিম, দুধ এবং মাংস উৎপাদনেও ক্রমশ এগচ্ছে রাজ্য।
আবার প্যাকেজিং সংস্থার উপস্থিতির পাশাপাশি রাজ্যে গুদামঘর এবং হিমঘরের সংখ্যা বাড়ছে। সরকার নিজে উদ্যোগী হয়ে খুলেছে কৃষক বাজার। আনা হয়েছে সুফল বাংলার মতো প্রকল্পও। এমনকি কৃষিজ শিল্পকে ত্বরান্বিত করতে সংশোধন করা হয়েছে আইনও। সেই পদক্ষেপগুলিকেই যাতে বিনিয়োগের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করা যায়, সেই কারণেই এবার কৃষিজ শিল্পকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে চাইছে রাজ্য।
এবার বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন পা দিতে চলেছে পঞ্চম বছরে। প্রতিবারই প্রথম দিন অনুষ্ঠানের সূচনাপর্বে হাজির হন তাবড় তাবড় শিল্পপতিরা। তাঁদের বিনিয়োগের প্রতিশ্রুতির পাশাপাশি থাকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের স্বাগত ভাষণ। যে অতিথিরা অনুষ্ঠানে যোগ দিতে অন্যান্য রাজ্য এবং বিদেশ থেকে আসেন, তাঁরা নিজেদের মধ্যে সেক্টর ভিত্তিক আলোচনার সুযোগ পান মূলত দ্বিতীয় দিনে। এবার সেই শিল্পের মোট ছ’টি ক্ষেত্রকে সামনে রেখে যে আলাদা ছ’টি আলোচনার আয়োজন করা হয়েছে, তার মধ্যেই অন্যতম কৃষিজ শিল্প।