ফের ‘এগিয়ে বাংলা’। সরকারি আবাস যোজনায় গরিব মানুষের বাড়ি তৈরিতে বিজেপি শাসিত গুজরাত ও উত্তরপ্রদেশকে পিছনে ফেলে এগিয়ে গিয়েছে পশ্চিমবঙ্গ। লাভ করেছে দ্বিতীয় স্থান।
যাঁদের নিজেদের কোনও বাড়ি নেই বা একটি করে ঘর আছে, তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার জন্য বছর তিনেক আগে এক কর্মসূচী নিয়েছিল কেন্দ্র। এই প্রকল্পে ৪০ শতাংশ টাকা দেয় বাংলা। এখানে এই প্রকল্পের নাম বাংলার আবাস যোজনা। যেহেতু ৪০ শতাংশ টাকা রাজ্য সরকার দেয়, তাহলে প্রধানমন্ত্রীর নামে কেন এই প্রকল্প হবে, সেই যুক্তিতেই নাম পরিবর্তন করেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। সেই প্রকল্পটিই গোটা ভারতের মধ্যে বাংলাকে এনে দিল দ্বিতীয় স্থান।
এই প্রকল্প শুরুর আগে রাজ্যজুড়ে আর্থ-সামাজিক সমীক্ষা হয়। সেই সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, ৩,৯২০টি পরিবারের কোনও গৃহ নেই। তাঁরা একেবারে গৃহহীন। প্রথমে তাঁদের বাড়ি তৈরি করে দেওয়ার কর্মসূচি নেওয়া হয়। ইতিমধ্যেই তাঁদের বাড়ি বানিয়ে দেওয়া হয়েছে। সমীক্ষায় দেখা গিয়েছে, রাজ্যে ৩৩ লক্ষ মানুষের কাঁচাবাড়ি রয়েছে। তাঁদের পাকা বাড়ি করে দেওয়ার লক্ষ্যমাত্রা ধার্য করেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এর জন্য পঞ্চায়েত দফতরে বিশেষ সেল তৈরি হয়। সেই সেলের উদ্যোগে এই হতদরিদ্র মানুষদের জন্য বাড়ি তৈরির পরিকল্পনা করা হয়। সেই মতো ১১ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৪২টি বাড়ি তৈরি হয়েছে।
চলতি আর্থিক বছরে রাজ্যে বাড়ি তৈরির লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫ লক্ষ ৮৬ হাজার। তার মধ্যে বুধবার পর্যন্ত ৩ লক্ষ ১৩ হাজার ৯২৭টি বাড়ি তৈরি হয়ে গিয়েছে। ৩১ মার্চের মধ্যে সেই লক্ষ্যমাত্রাকে স্পর্শ করতে জেলায় জেলায় নির্দেশ পাঠানো হয়েছে। তবে বাড়ি তৈরিতে পিছিয়ে রয়েছে পাহাড়ি এলাকা। সেখানে বাড়ি তৈরির জন্য জিটিএ’কে পঞ্চায়েত দপ্তরের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে। এই প্রকল্পে এখনও পর্যন্ত রাজ্যে খরচ হয়েছে ২৪ হাজার ৮৯০ কোটি টাকা। তার মধ্যে কেন্দ্রীয় সরকার দিয়েছে ১৪ হাজার ৯৩৪ কোটি টাকা। বাদবাকি টাকা রাজ্য সরকারই দিয়েছে। রাজ্যের পঞ্চায়েত দপ্তর এই প্রকল্পের কাজ দ্রুত শেষ করতে উদ্যোগী হয়েছে। বুধবার পর্যন্ত পশ্চিমবঙ্গে এই প্রকল্পে গরিব মানুষের বাড়ি হয়েছে ১১ লক্ষ ২৪ হাজার ৮৪২টি। সেখানে গুজরাতে তৈরি হওয়া বাড়ির সংখ্যা মাত্র ১ লক্ষ ৫২ হাজার ৩৫৪টি। আর যোগীর রাজ্য উত্তরপ্রদেশে হয়েছে ৯ লক্ষ ৬০ হাজার ৩৫টি বাড়ি।