আসন্ন লোকসভা নির্বাচনকে ঘিরে সারা দেশে যখন দিল্লীর পালাবদলের চর্চা, তখন ঘুরেফিরে বারবার উঠে আসছে তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের নাম। এই মুহূর্তে জাতীয় রাজনীতিতে মোদী বিরোধী অন্যতম মুখ মমতা। প্রধানমন্ত্রী পদের অন্যতম দাবিদারও তিনি। সে কথাই আরও একবার মনে করিয়ে দিলেন রাজ্যের প্রাক্তন রাজ্যপাল এম কে নারয়ণন। বললেন, ‘জাতীয় নেত্রী হিসাবে মমতা ধীরে ধীরে উঠে এসেছেন। এখন দেশে যে কজন নেতা আছেন, তাঁদের থেকে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনেক ভালো এবং যোগ্য’।
কয়েকদিন আগেই আরেক প্রাক্তন রাজ্যপাল গোপালকৃষ্ণ গান্ধী বলেছিলেন, ‘দেশে মুক্ত গণতন্ত্র তৈরি করতে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ভূমিকা খুবই গুরুত্বপূর্ণ’। এবার আরও একধাপ এগিয়ে নারায়ণন মমতাকে তুলে ধরলেন জাতীয় নেত্রী হিসাবে। পরোক্ষে প্রধানমন্ত্রী পদে মোদীর প্রধান প্রতিপক্ষ হিসাবেও বর্ননা করলেন মমতাকে।
কলকাতায় বণিকসভার এক অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এম কে নারায়ণন। সেখানেই মমতাকে দরাজ সার্টিফিকেট দিয়ে নারায়ণন বলেন, ‘জাতীয় স্তরে যে কজন নেতা উঠে আসছেন। তাঁদের মধ্যে অবশ্যই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অন্যতম। সাদামাটা জীবনযাপনই তাঁর হাতিয়ার। এখনকার নেতাদের থেকে তিনি অনেক ভালো’।
নারায়ণনের কথায়, ‘ভাল শ্রোতা হওয়া এক জন নেতার সব চেয়ে বড় গুণ। মমতার সেই গুণ রয়েছে। তিনি মন দিয়ে শোনেন। ধীরে ধীরে নিজেকে তৈরি করেছেন’।মুখ্যমন্ত্রী হিসাবে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কথা উল্লেখ করে নারায়ণন বলেন, ‘মমতার সঙ্গে আমার সম্পর্ক খুবই ভাল ছিল। কখনও যে এদিক-ওদিক হয়নি, তা নয়। তবে সব সময় আমি তাঁকে বলতাম, বয়সে তোমার চেয়ে অনেক বড় আমি। বাবার মতো। যা বলছি সেটা শোন। এমন কখনও হয়নি যখন মমতা আমার কথা শোনেননি’।
বাংলার রাজ্যপাল হিসাবে আসার আগে জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা হিসাবেও কাজ করেছেন এম কে নারায়ণন। সেই পদকে সামনে রেখে অনুষ্ঠানে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক প্রসঙ্গও আসে। তার মধ্যে অন্যতম ছিল প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিংকে কেন্দ্র করে সঞ্জয় বারুর লেখা বই ‘দ্য অ্যাক্সিডেন্টাল প্রাইম মিনিস্টার’। সেই প্রসঙ্গে নারায়ণনের বক্তব্য টাকার জন্য ওই বই লেখা হয়েছে, যার ৮০ শতাংশ মিথ্যা। নরেন্দ্র মোদীর নোটবন্দীর সিদ্ধান্ত সন্ত্রাসবাদীদের আর্থিক মদতে কতটা বাধা দিতে পেরেছে, সেই প্রশ্ন তোলার পাশাপাশি সার্জিকাল স্ট্রাইককে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত বলে ব্যাখ্যা করেন তিনি।