আবারও প্রকাশ্যে চলে এল আরএসএস-বিজেপি সংঘাত। তবে এবার রামমন্দির নয়, শবরীমালা মন্দির বিতর্কে সঙ্ঘ পরিবারের সঙ্গে বাঁধল বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের দ্বন্দ্ব। জানা গেছে, মতবিরোধ এখন এমন পর্যায়ে গেছে যে আরএসএস পরিচালিত বিক্ষোভ কর্মসূচি থেকে সরে দাঁড়াতে চাইছে সে রাজ্যের বিজেপি। এমনকি রিপোর্ট গেছে বিজেপির সর্বভারতীয় সভাপতি অমিত শাহের কাছেও। যা শুনে দলের রাজ্য নেতৃত্বের প্রতি ‘চিন্তিত’ শাহর পরামর্শ, প্রকাশ্যে এমন কোনও কাজ করা উচিত হবে না যাতে ঘরের বিরোধ বাইরে বেরিয়ে আসে। তিনি কেরলে গিয়ে আলোচনা করেই যা চূড়ান্ত করার, করবেন।
আয়াপ্পা দর্শনে মহিলাদের প্রবেশের প্রতিবাদে লাগাতার ধর্না-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছে শবরীমালা কর্মসমিতি। সঙ্ঘ-প্রভাবিত এই সংগঠনের বিক্ষোভেই সামিল হচ্ছিলেন বিজেপির নেতা-কর্মীরা। কিন্তু ক্রমেই যাবতীয় কর্মসূচির নিয়ন্ত্রণ সঙ্ঘের হাতে চলে যাওয়ায় ক্ষোভ জমতে শুরু করে বিজেপির অন্দরে। ধর্না-অবস্থান প্রথমে শবরীমালা মন্দিরের কাছে শুরু হলেও পরে তা তিরুবন্তপুরমে রাজ্য সচিবালয় চত্বরে নিয়ে গিয়েছে কর্মসমিতি।
এই পরিস্থিতিতে বিজেপির রাজ্য নেতৃত্বের বড় অংশের প্রশ্ন, মন্দিরকে ঘিরে কর্মসমিতি তাদের প্রতিবাদ চালাতেই পারে। কিন্তু সচিবালয়ের সামনে ধর্না বা বিক্ষোভ পুরোদস্তুর রাজনৈতিক কর্মসূচি। রাজ্য বিজেপির সঙ্গে আলোচনা ছাড়াই অমন রাজনৈতিক কর্মসূচি কেন নেবে সঙ্ঘের সংগঠন? এই ক্ষোভ থেকেই অনির্দিষ্ট কাল ধর্না থেকে সরে দাঁড়ানোর পক্ষে দলের অন্দরে সওয়াল করছেন কেরল বিজেপির অধিকাংশ নেতা।
দিল্লীতে দলের জাতীয় পরিষদের বৈঠকে যোগ দিতে গিয়েছিলেন কেরল বিজেপির নানা স্তরের নেতারা। দলীয় সূত্রের খবর, সেই বৈঠকের পরেই শাহের সঙ্গে আলাদা করে কথা হয়েছে কেরল বিজেপি নেতৃত্বের। ঠিক হয়েছে, আগামী ২১ জানুয়ারি শাহ নিজেই কেরলে যাবেন। তখন সঙ্ঘ ও বিজেপি দু’পক্ষকেই ডেকে তাদের যুক্তি, পাল্টা যুক্তি শুনবেন তিনি। তাই রাজ্য নেতাদের তিনি নির্দেশ দিয়েছেন লোকসভা ভোটের মুখে কোনও ‘হঠকারী’ পদক্ষেপ না নিতে।
এ প্রসঙ্গে কেরল বিজেপির রাজ্য সভাপতি পি এস শ্রীধরন পিল্লাই বলেন, ‘শবরীমালা নিয়ে গোটা পরিস্থিতি সম্পর্কে সর্বভারতীয় সভাপতিকে জানানো হয়েছে। তাঁর নির্দেশ মতোই পরবর্তী পদক্ষেপ ঠিক হবে। তিনি নিজেও রাজ্যে আসবেন।’ একইসঙ্গে তিনি এই ইঙ্গিতও দিয়েছেন যে, শাহর পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত তারা কর্মসমিতির ধর্নায় নাম-কা-ওয়াস্তে যোগদান চালিয়ে যেতে পারে। তবে দলের প্রথম সারির রাজ্য নেতারা তাতে থাকবেন না।