‘সেমিফাইনালে বিজেপি ৫-০ গোলে হেরেছে। ফাইনালেও হার নিশ্চিত।’ আবারও এ কথা সাফ জানিয়ে দিলেন তৃণমূল যুব কংগ্রেসের সর্বভারতীয় সভাপতি তথা সাংসদ অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়।
ইতিহাস তৈরির দোরগোড়ায় তৃণমূল। সপ্তাহ ঘুরলেই তাদের বহু প্রতীক্ষিত ১৯ জানুয়ারির ঐতিহাসিক ব্রিগেড সমাবেশের প্রচার করতে এসে শনিবার হুগলীতে আসেন অভিষেক। পোলবার অমরপুর মাঠে হওয়া বিশাল জনসভার মঞ্চ থেকে তিনি বলেন, ‘সেমিফাইনালে বিজেপি ৫-০ গোলে হেরেছে। ফাইনালেও হার নিশ্চিত। পাঁচ রাজ্যে বিজেপি হেরেছে। একইসঙ্গে কমেছে গ্যাস, পেট্রোল, ডিজেলের দাম। কমেছে জিএসটিও।’
তাঁর কথায়, ‘ওরা যত হারবে জিনিসপত্রের দাম তত কমবে। দেশ থেকে বিজেপি উৎখাত হলে দাম আরও কমবে। পেট্রোলের দাম হবে ৫০ টাকা প্রতি লিটার। রান্নার গ্যাস নিম্ন মধ্যবিত্তের নাগালে পৌঁছে যাবে।’ ওই সভায় অভিষেক ছাড়াও ছিলেন তথ্য সংস্কৃতি দফতরের রাষ্ট্রমন্ত্রী ইন্দ্রনীল সেন, কৃষি বিপণনমন্ত্রী তপন দাশগুপ্ত, মন্ত্রী অসীমা পাত্র, সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, রত্না দে নাগ, অপরূপা পোদ্দার, বিধায়ক অসিত মজুমদার, ব্যাচারাম মান্না, রচপাল সিং প্রমুখ।
গতকাল অভিষেক জানান, ‘ব্রিগেড সমাবেশ আগেও হয়েছে। তবে এই সমাবেশের আলাদা গুরুত্ব তথা প্রাসঙ্গিকতা রয়েছে। এই সমাবেশে কাশ্মীরের ফারুক আবদুল্লা, ওমর আবদুল্লা, দিল্লীর অরবিন্দ কেজরিওয়াল, তামিলনাড়ুর ডিএমকে পার্টির এন কে স্ট্যালিন, শরদ পাওয়ার, শরদ যাদব, বিহারের তেজস্বী যাদব, উত্তরপ্রদেশের অখিলেশ যাদব, শত্রুঘ্ন সিনহা-সহ দেশের বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের শীর্ষ নেতৃত্ব উপস্থিত থাকবেন।’
বিজেপির বিরুদ্ধে তোপ দেগে তৃণমূল যুব সভাপতি বলেন, ‘বিজেপির শেষের শুরু হয়ে গেছে। আগামী ১৯ জানুয়ারি তাদের কফিনের শেষ পেরেকটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় কলকাতার বুকে দাঁড়িয়েই পুঁততে চলেছেন। আমাদের নেত্রী কখনই বিজেপির ধমকানি, চমকানি, চোখ রাঙানির কাছে বশ্যতা শিকার করেনি। তাই কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী সকলের মুখে একটাই কথা— দিদি তুমি এগিয়ে চল।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভারতীয় জনতা পার্টি এখন ভারতীয় জঞ্জাল পার্টিতে পরিণত হয়েছে। তৃণমূল যাদের তাড়িয়ে আবর্জনার স্তূপে ফেলছে, ওরা তাদেরই খুঁজে নিয়ে মাথায় বসাচ্ছে। সমস্ত চোর-গদ্দারদের এখন একটাই ঠিকানা ভারতীয় জনতা পার্টি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় চাইলে এক রাতেই ২ লক্ষ মুকুল রায়, ৪ লক্ষ সৌমিত্র খাঁ তৈরি করতে পারেন। কিন্তু ৪ লক্ষ মুকুল আর সৌমিত্র চেষ্টা করলেও একটা মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তৈরি করতে পারবে না।’
মোদীকে অভিষেকের কটাক্ষ, ‘দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী প্রচারখাতে ৫ বছরে খরচ করেছেন ৫ হাজার ২৭৮ কোটি টাকা। লোকসভায় মন্ত্রী রাজ্যবর্ধন রাঠোর লিখিতভাবে এ তথ্য জানিয়েছেন। গুজরাটে মূর্তি বানাতেই খরচ হয়েছে ৩ হাজার কোটি টাকা! আর এই রাজ্যে, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ১০ হাজার কোটি টাকা খরচ করে কৃষকদের স্বার্থ সুরক্ষা করেছেন। কেন্দ্রের সঙ্গে এটাই আমাদের পার্থক্য।’
অভিষেকের সভা উপলক্ষ্যে গতকাল মানুষের ঢল নেমেছিল পোলবার অমরপুর মাঠে। যুব সভাপতি যখনই বিজেপিকে আক্রমণ করেছেন, তখনই হাততালি দিয়ে তাঁকে সমর্থন জানিয়েছেন উপস্থিত জনতা।