ভিনরাজ্য থেকে আসা ছাত্রছাত্রীরাই বেশি সংখ্যায় সুযোগ পেয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের বিশ্ববিদ্যালয়গুলিতে। ফলে মার খাচ্ছে বাংলার মেধা। তাই, স্নাতকোত্তরে ভর্তির ক্ষেত্রে ৬০:৪০ অনুপাত নিয়ে পর্যালোচনা করতে হবে। যাদবপুরে ভিনরাজ্যের পড়ুয়াদের বাড়বাড়ন্তকে ইঙ্গিত করেই মঙ্গলবার বিকাশ ভবনে উচ্চশিক্ষা সংসদের বৈঠকে উপাচার্যদের নির্দেশ দিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী পার্থ চট্টোপাধ্যায়। কারণ যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের স্নাতকস্তরে বাড়াবাড়ি রকমের এই সমস্যা রয়েছে। রাজ্যের পড়ুয়াদের সুবিধা দিতে যে ডোমিসাইল পদ্ধতি রয়েছে, তা এখানে কার্যকর নেই।
এর পাশাপাশি ডিগ্রি কলেজগুলিতে ভর্তির সময় যাতে কোনও প্রকারের দুর্নীতি বা দাদাগিরির ঘটনা না ঘটে, সে দিকেও কড়া নজর শিক্ষামন্ত্রীর। তাঁর নির্দেশ কলেজে ভর্তির সময় যাতে পড়ুয়াদের কোনওভাবেই সশরীরে হাজির থাকতে না হয়; ফর্ম তোলা, জমা দেওয়া এবং টাকা জমা দেওয়া সবটাই যাতে অনলাইনে হয়, তার বন্দোবস্ত করতে হবে বিশ্ববিদ্যালয় এবং কলেজগুলিকে। সামনের ভর্তি প্রক্রিয়া থেকেই এটা কঠোরভাবে মেনে চলতে হবে। তিনি জানান, শুধুমাত্র ক্লাস শুরুর আগে ভেরিফিকেশনের সময় ছাত্রছাত্রীদের উপস্থিত থাকতে হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক এবং শিক্ষাকর্মী নিয়োগে দেরির সমালোচনা করে পার্থ বলেন, এরকম চললে পদগুলির অনুমোদন বাতিল করবে সরকার। তিনি সাফ জানিয়ে দেন, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশের পর মন্ত্রিসভায় পাশ হয়ে পদের অনুমোদন দিয়ে দেওয়া সত্ত্বেও এই দেরি মেনে নেওয়া যায় না। যদি কোথাও সংরক্ষণ সংক্রান্ত সমস্যা থাকে, তাহলে সেই বিশ্ববিদ্যালয়কেই সংশ্লিষ্ট দফতরের সঙ্গে আলোচনাসাপেক্ষে তা মিটিয়ে ফেলতে হবে। জানা গেছে, বৈঠক শেষে সব উপাচার্যই আশ্বাস দিয়েছেন, যুদ্ধকালীন তৎপরতায় এই সমস্যা মিটিয়ে ফেলা হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের পি ডে বা প্রস্তুতি দিবসের ছুটিকে পঠনপাঠনে ব্যবহার করতে চায় সরকার। সপ্তাহে একদিন ছুটি ছাড়াও শিক্ষকরা আরেকটি দিন ব্যক্তিগত প্রস্তুতির জন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে নাও আসতে পারেন। কিন্তু অনেক ক্ষেত্রেই এটা ছুটি হিসেবেই পালন করেন শিক্ষকরা। এদিকে, সিবিসিএস চালুর পর পঠনপাঠনের সময় অনেক কমে গিয়েছে। বিশেষ করে প্রথম সেমেস্টারে ভর্তি, রেজিস্ট্রেশনের জন্য ক্লাস শুরু মাস দু’য়েক পিছিয়ে যায়। তাই পি ডে-কে যাতে পঠনপাঠনে ব্যবহার করা যায়, সে ব্যাপারে শিক্ষকদের সঙ্গে আলোচনার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বৈঠকে উপস্থিত সমস্ত উপাচার্যকে।
অনেক সময়েই পড়ুয়ারা অভিযোগ করে, উপস্থিতির প্রয়োজনীয় হার নিয়ে তাদের মধ্যে সঠিকভাবে প্রচার হয় না। এই অভিযোগ যে অনেকাংশেই ঠিক তা স্বীকার করে নিয়ে মন্ত্রীর নির্দেশ, হাজিরা বাড়াতেই হবে। তবে প্রথম থেকেই প্রয়োজনীয় উপস্থিতির হার এবং কোনও পড়ুয়া কতদিন উপস্থিত থাকছেন, তা তাঁকে নিয়মিত জানাতে হবে।