প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে পর্যন্ত ছেড়ে কথা বলেননি গীতা গোপীনাথ। নোটবন্দীর তীব্র সমালোচনা করেন তিনি। কর্মজগতে প্রবেশ করার পর থেকেই তিনি মুখরা। কিন্তু এই দৃপ্ত মনোভাবই তাঁকে এনে দিল জয়ের মুকুট। আন্তর্জাতিক অর্থ ভাণ্ডারের(আইএমএফ) একাদশতম প্রধান অর্থনৈতিক উপদেষ্টা নিযুক্ত হলেন গীতা গোপীনাথ। প্রসঙ্গত ভারতীয় বংশোদ্ভূত গীতা প্রথম মহিলা, যিনি আইএমএফ-এর শীর্ষ পদ পেলেন। সোমবার আনুষ্ঠানিক ভাবে অর্থনীতিবিদ গীতার নাম ঘোষণা করে আইএমএফ কর্তৃপক্ষ।
আইএমএফের মুখ্য অর্থনীতিবিদ হিসাবে সম্প্রতি মেয়াদ শেষ করেছেন অর্থনীতিবিদ মরিস ওবসটফেল্ড৷ তাঁর জায়গায় দায়িত্ব নিলেন ৪৬ বছরের গীতা গোপীনাথ। এর আগে একাধিক গুরুত্বপূর্ণ প্রতিষ্ঠানে কাজ করেছেন গীতা গোপীনাথ৷ জি-২০ বৈঠকে অর্থমন্ত্রকের পরামর্শদাতা কমিটির সদস্য ছিলেন তিনি। দীর্ঘদিন ধরে তিনি কাজ করেছেন কেরলের মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন সরকারের আর্থিক উপদেষ্টা হিসেবে৷
বর্তমানে হাভার্ড ইউনিভার্সিটিতে অধ্যাপনা করেন তিনি। সম্প্রতি ইউনিভার্সিটি গেজেটে প্রকাশিত তাঁর একটি সাক্ষাৎকারে তিনি আইএমএফ-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর ক্রিস্টিন ল্যাগার্দের প্রশংসা করেন। তখনই তিনি জানান, প্রথম মহিলা হিসাবে আইএমএফ-এর উপদেষ্টার দায়িত্ব নিতে চলেছেন। যদিও এর সম্পূর্ণ কৃতিত্ব তিনি ল্যাগার্দেকেই দিয়েছেন।
তাঁর জন্ম কলকাতায়। স্কুল জীবনের কিছুটা সময়ও কেটেছে এই শহরেই। তাঁর বাবা ছিলেন কৃষক, মা সাধারণ গৃহকর্ত্রী। ছোট থেকেই মেধাবী ছিলেন গীতা৷ উচ্চশিক্ষার জন্য তিনি দিল্লিতে যান৷ সেখান থেকে পাড়ি দেন আমেরিকায়। ২০০১-তে আমেরিকার প্রিন্সটন বিশ্ববিদ্যালয় থেকে অর্থনীতিতে পিএইচডি করেন গীতা। তারপর শিকাগো বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক হিসেবে কাজ শুরু করেন। ২০০৫-তে হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগ দেন৷ ২০১০ থেকে সেখানে অধ্যাপনা শুরু করেন। নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেনের পর গীতা গোপীনাথই প্রথম ভারতীয়, যিনি হার্ভার্ডের অর্থনীতি বিভাগে চুক্তিভিত্তিক অধ্যাপনা করেছেন।
গীতা জানিয়েছেন দায়িত্ব হাতে পেয়ে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে মনোযোগ দেবেন তিনি। তিনি বলেছেন, ‘আন্তর্জাতিক বাণিজ্য এবং অর্থনীতিতে এই মুহূর্তে ডলারের প্রাধান্য রয়েছে। ডলারের মাধ্যমেই অনেক দেশ লেনদেন চালায়। কিন্তু আন্তর্জাতিক মূল্য এবং অর্থনৈতিক ব্যবস্থায় তার কীরকম প্রভাব পড়ছে তা খতিয়ে দেখাই আমার লক্ষ্য’।