আগামী ৯ জানুয়ারি থেকে শুরু হতে চলেছে গঙ্গাসাগর মেলা। গঙ্গাসাগর মেলা যে এবার ’বাংলার কুম্ভ মেলা’য় পরিণত হতে চলেছে, শুক্রবার দুপুরে আলিপুরের নতুন প্রশাসনিক ভবনে সাংবাদিক সম্মেলনে এমন কথাই জানালেন দক্ষিণ ২৪ পরগনার জেলাশাসক ওয়াই রত্নাকর রাও। চূড়ান্ত মুহূর্তের প্রস্তুতি চলছে এখন। রাজ্য সরকার ও জেলা প্রশাসনের আয়োজনে এই মেলার বাজেট এবার ১০০ কোটি ছাড়াচ্ছে। গত বছর এই মেলার বাজেট ছিল ৭৫ কোটি।
শুধু বাজেট নয় এবার বাড়তে চলেছে মেলায় আগত দর্শনার্থীদের ভিড়ও। গতবার ৩০ লক্ষের মতো ভিড় হয়েছিল। এবার তা ৩৫ লক্ষ ছাড়াবে বলে আশা করা হচ্ছে। আর তাই মানুষের নিরাপত্তার দিকে দেওয়া হচ্ছে তীক্ষ্ণ নজর। জেলাশাসক জানান, ডিসেম্বর থেকে এ পর্যন্ত মেলা নিয়ে সরকারের সঙ্গে কয়েক দফা আলোচনা হয়েছে জেলা প্রশাসনের। রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী নিজে মেলার প্রস্তুতি দেখে এসেছেন। এই প্রথম মেলাতে পুণ্যার্থীদের ভিড় সামলাতে প্রায় ২০ কিমি রাস্তায় মেটাল ব্যারিকেড করা হয়েছে। যেখানে বেশি ভিড় হওয়ার সম্ভাবনা, সেখানে বাঁশের ব্যারিকেডের বদলে মেটাল ব্যারিকেড করা হয়েছে।
ইতিমধ্যে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ঘোষণা করেছেন সাগর মেলায় কোনও দুর্ঘটনা ঘটলে পুণ্যার্থীরা ৫ লক্ষ টাকার দুর্ঘটনা বিমা পাবেন। বাবুঘাট থেকে গঙ্গাসাগর যেখানেই দুর্ঘটনা ঘটুক না কেন, বিমার আওতায় আসবেন পুণ্যার্থীরা। সাংবাদিকরাও এর আওতায় আসবেন। নিরাপত্তার জন্য ৩০ জন অতিরিক্ত পুলিশ সুপার-সহ ৮৯ জন ডিএসপি, ২৪০ ইনস্পেক্টর, ৩ হাজার কনস্টেবল, ২ হাজার হোমগার্ড, ১ হাজার সিভিল ডিফেন্স ও ২ হাজার এনডিআরএফ কর্মী মোতায়েন করা হচ্ছে।
মেলা উপলক্ষ্যে প্রিন্সেপ ঘাট থেকে নামখানা পর্যন্ত প্রতিদিন দু’টি করে স্পেশাল ট্রেন চলবে। থাকবে বিশেষ বাস। পাশাপাশি, এ বছর প্রথম মেলায় স্পেশাল আইসিইউ তৈরি করা হয়েছে। ৫০টি অ্যাম্বুল্যান্স এবং ১০০টি স্বেচ্ছাসেবী কাজ করবে। শুক্রবারের সাংবাদিক বৈঠকে রত্নাকর রাও ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলার দুই অতিরিক্ত জেলাশাসক মৃণালকান্তি রাণো, শ্যামল মণ্ডল এবং জেলা তথ্য ও সংস্কৃতি আধিকারিক লিপিকা বন্দ্যোপাধ্যায়। মেলার বিভিন্ন জায়গায় নিয়ে মোট ৮০০টি সিসি টিভি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। এ ছাড়াও নজরদারির জন্য ২০টি ড্রোন এবং ২০০টি ক্যামেরা লাগানো বেলুন উড়বে। ১৭ তারিখ পর্যন্ত এই মেলা চলবে।