ঋতুমতী অবস্থায় পুজো দিলে আয়াপ্পা ক্রুদ্ধ হবেন, এই কুসংস্কারের উপর ভিত্তি করেই কয়েক দশক ধরে ১০ থেকে ৫০ বছর বয়স অবধি কোনও নারীর প্রবেশাধিকার ছিল না এই মন্দিরে। গত সেপ্টেম্বরে সুপ্রিম কোর্ট এক ঐতিহাসিক রায়ে বলে ভক্তদের মধ্যে লিঙ্গবৈষম্য করা যাবে না। যে কোনও বয়সের মহিলাকেই প্রবেশাধিকার দিতে হবে শবরীমালা মন্দিরে। নতুন বছরের শুরুতেই শবরীমালায় ইতিহাস তৈরি করেছেন দুই নারী। সব প্রথা ভেঙ্গে ভগবান আয়াপ্পার মূর্তির সামনে পুজোও দিলেন তাঁরা। তারপর থেকেই কেরালা জুড়ে সন্ত্রাস তৈরি করছে বিজেপি এবং কট্টরপন্থী হিন্দু সংগঠন শবরীমালা কর্ম সমিতি। এই উত্তপ্ত পরিস্থিতিতে বৃহস্পতিবার এক জনের মৃত্যুও হয়েছে।
বুধবার দিনভর বিজেপির ডাকা বনধ ও বিক্ষোভ আন্দোলনের জেরে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে মন্দির চত্বর-সহ গোটা কেরালা। বিক্ষোভকারীদের ছোঁড়া পাথরে গুরুতর আহত হন এক ব্যক্তি। বৃহস্পতিবার ভোর রাতে তিনি মারা যান। এই ঘটনা সামনে আসতেই বিজেপির বিরুদ্ধে ক্ষোভে ফেটে পড়ে মানুষ। প্রশ্ন ওঠে আদালত যেখানে রায় দিয়েছে সেখানে বিজেপি কি করে তাকে অমান্য করতে পারে?
শুধু তাই নয়, দুই মহিলা চিত্র সাংবাদিককে নিগ্রহের অভিযোগও উঠল বিজেপি কর্মীদের বিরুদ্ধে। বৃহস্পতিবার বিক্ষোভ চলাকালীন ঘটনাস্থলে গিয়ে ছবি তুলতে যান ওই মহিলা চিত্র সাংবাদিক। তখনই তাঁকে নিগ্রহ করা হয়। সোশ্যাল মিডিয়ায় ইতিমধ্যেই ভাইরাল হয়ে গেছে বিজেপি কর্মীদের হাতে লাঞ্ছিত হয়ে কান্নাভেজা মহিলা চিত্র সাংবাদিকের ছবি।
শবরীমালার ঘটনায় যেভাবে বিজেপির বিরুদ্ধে একের পর এক সন্ত্রাসের অভিযোগ উঠছে তাতে আরও কোণঠাসা হয়ে পড়ছে মোদী-বাহিনী। বিজেপিকে আরও বিদ্ধ করে কেরালার মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন বিজেপি এবং হিন্দুত্ববাদী সংগঠনগুলির উস্কানিতেই শবরীমালা মন্দির নিয়ে এই হরতাল-বিক্ষোভ অশান্তি চলছে। এই ঘটনায় আরও একবার প্রমাণ হয়ে গেল বিজেপির কাছে হিন্দুত্ববাদই সব থেকে প্রাধান্য পায় মানুষের মৃত্যু বা নারী নিগ্রহ নয়।