“নেরোকাকে সমীহ করতেই হবে। ধারাবাহিকভাবে ওরা ভাল খেলছে। শেষ চার-পাঁচটা ম্যাচে বুঝিয়ে দিয়েছে, কোন জায়গায় দাঁড়িয়ে ওরা। ওদের গুরুত্ব না দিয়ে উপায় নেই।” ইম্ফল থেকে বললেন শংকরলাল চক্রবর্তী।
এখনও পর্যন্ত নেরোকা ঘরের মাঠে হারেনি। তার উপর দলে এমন কয়েকজন আছেন যারা একসময় সবুজ-মেরুন জার্সি গায়ে খেলেছেন। বলা যায় ঘরশত্রু। ওঁরা হলেন, এডু, কাটসুমি, স্মরণ ও সুভাষ সিং। অনেকের মতে, পুরনো দলকে চাপে ফেলতে ওঁরা শুরুতেই ঝাঁপাবে। এটাই মাঠে নামার আগে ওঁদের মোটিভেশন। এ সব মাথায় রেখেও বলতে হয়, কলকাতার দলগুলি এই মরশুমে অ্যাওয়ে ম্যাচে ভাল খেলছে। ঘরের মাঠের সুবিধা নিতে না পারলেও বাইরে গিয়ে পয়েন্ট আনছে। তবে নেরোকা মাঠ ভরিয়ে গ্যালারি থেকেও বাগানকে চাপে ফেলবে। শংকরলালের দলের কাছে তাই ইম্ফল মাথাব্যথার কারণ হয়ে উঠেছে।
গত মরশুমে আই লিগে দ্বিতীয় হলেও মোহন বাগানকে হারাতে পারেনি নেরোকা এফসি। কলকাতায় দুই দলের ম্যাচ গোলশূন্য ড্র হয়েছিল। ইম্ফলে অবশ্য মোহন বাগান ৩-২ গোলে জেতে। শুক্রবার সেই হারের মধুর প্রতিশোধ নিতে তৈরি নেরোকা। কোচ ম্যানুয়েল ফ্রেইলের নোটবুকে ইতিমধ্যেই উঠে গিয়েছে মোহন বাগানের ভুলত্রুটি। গুরুত্বপূর্ণ ম্যাচে তা কীভাবে কাজে লাগাতে হবে সেটাই এদিনের অনুশীলনে কাটসুমি-সুভাষ সিংদের বুঝিয়ে দিলেন তিনি। পক্ষান্তরে, প্রথম লেগের শেষ ম্যাচ জেতার জন্য তাল ঠুকছে মোহন বাগানও। ডার্বি হারের পর টানা দু’টি ম্যাচ জেতায় ডিপান্ডা ডিকা-ইউটা কিনোয়াকিদের আত্মবিশ্বাস তুঙ্গে। পাহাড়ের কোলে একটি মাঠে অনুশীলন করে সবুজ-মেরুন ব্রিগেড। মোহন বাগানের প্রথম একাদশে দু’টি পরিবর্তন হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। লেফট উইং ব্যাকে অভিষেক আম্বেকরের পরিবর্তে শুরু করতে পারেন গুরজিন্দর সিং। সেন্ট্রাল মিডফিল্ডে ইউটা কিনোয়াকির পাশে দেখা যেতে পারে শিলটন ডি’সিলভাকে। এছাড়া বাকি দল অপরিবর্তিত থাকবে। নেরোকার বিরুদ্ধে পাঁচ মিডফিল্ডারেই দল সাজানোর পরিকল্পনা রয়েছে মোহন কোচ শঙ্করলাল চক্রবর্তীর। সিঙ্গল স্ট্রাইকারে ডিপান্ডা ডিকা। সাংবাদিক সম্মেলনে ইউটা-কিংসলেদের হেডস্যার বলেন, ‘গতবারের তুলনায় এবার নেরোকা অনেক বেশি সংগঠিত ফুটবল খেলছে। গত কয়েকটি ম্যাচের দিকে তাকালে তা স্পষ্ট বোঝা যাবে। ঘরের মাঠে সমর্থকদের শব্দব্রহ্মের সামনে খেলার সময় নেরোকার ফুটবলাররা বাড়তি উদ্দীপনা পায়। তবে আমাদের কাছেও এটি মাস্ট উইন ম্যাচ। চোট-আঘাত সমস্যা থাকলেও তিন পয়েন্টই পাখির চোখ। ম্যারাথন লিগে ফুটবলাররা চোট পাবেই। ১২দিনের মধ্যে চারটি ম্যাচ খেলা সহজ নয়। কিন্তু এসব নিয়ে ভেবে লাভ নেই। ছোটখাটো কিছু ভুলত্রুটির জন্য এই মুহূর্তে আমরা লিগ তালিকায় পঞ্চম স্থানে রয়েছি। এবারের আই লিগ অত্যন্ত প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ। প্রথম আটটি দলের মধ্যে পয়েন্টের তেমন পার্থক্য নেই। তাই ছেলেদের বলেছি, লিগ টেবলের দিকে না তাকিয়ে ম্যাচ বাই ম্যাচ ভাবতে।’ প্রথম ৯টি ম্যাচে ১০ গোল হজম করেছে মোহন বাগান। পাশাপাশি প্রতি ম্যাচেই একাধিক সহজ সুযোগ নষ্ট হয়েছে।
৯ ম্যাচে মোহন বাগান ও নেরোকা, দুই দলই ১৫ পয়েন্ট পেয়েছে। তবে গোল পার্থক্যে এগিয়ে থাকার সুবাদে নেরোকা চতুর্থ স্থানে।