পূণ্যতীর্থ গঙ্গাসাগরের উন্নয়নে কোনও নজরই দেয়নি হিন্দুত্ববাদী মোদী সরকার। রাজ্যের তরফে বারবার আবেদন করা হলেও কোনও পদক্ষেপ করেনি কেন্দ্র। গঙ্গাসাগরের উন্নয়নের প্রসঙ্গ টেনে শুক্রবার এভাবেই কেন্দ্রের বিরুদ্ধে বঞ্চনার অভিযোগে সরব হলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
৩ দিনের জেলা সফরে এসে আজ শুক্রবার ডায়মণ্ডহারবারে জেলা পুলিশের একটি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। সেখানেই কপিলমুনির আশ্রম ঘিরে উন্নয়নের তালিকা তুলে ধরেন মমতা। এই প্রসঙ্গেই উঠে আসে কেন্দ্রীয় বঞ্চনার প্রসঙ্গ। মমতা বলেন, ‘কেন্দ্রকে গঙ্গাসাগরে একটি বন্দর তৈরি করার অনুরোধ করলেও কেন্দ্র সে ব্যাপারে কোনও উদ্যোগ নেয়নি। এমনকি তাদের কথা মতো প্রস্তাবিত বন্দরের শেয়ার ৭৪ শতাংশ ছাড়তে রাজি থাকলেও মুড়ি গঙ্গার উপর লোহার সেতু তারা তৈরি করেনি৷ অথচ, রাজ্য থেকে অন্তঃশুল্ক, সেস বাবদ নিয়মিত টাকা নিয়ে যাচ্ছে ওরা’।
তবে মুখ্যমন্ত্রী আশ্বাস দিয়ে বলেন, কেন্দ্র বঞ্চনা করলেও রাজ্য সরকার উন্নয়নে খামতি রাখবে না৷ মমতার কথায়, ‘কপিলমুণির আশ্রমকে ঘিরে কেন্দ্রকে বলেছিলাম উন্নয়নের জন্য৷ কিন্তু ওরা তাকিয়ে দেখার প্রয়োজন বোধ করেনি৷ আমরা ওদের থেকে ভিক্ষে নিতে যাব না৷ নিজেরাই উন্নয়ন করে দেখিয়ে দেব’৷
কেন্দ্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ করে মমতা বলেন, ‘কাজ করছে রাজ্য আর নাম কিনছে কেন্দ্র। ফসলবিমার জন্য বরাদ্দ টাকার ৮০ শতাংশই দেয় রাজ্য সরকার। কিন্তু ফসলবিমার নাম করে নির্বাচনের আগে নাম কিনছে কেন্দ্র সরকার’। তাঁর কথায়, ‘প্রায় ৫০০০০ টাকা এরাজ্য থেকে তোলে কেন্দ্র। কিন্তু সেখান থেকে রাজ্যকে মাত্র ১০০০০ টাকা করে দেওয়া হয়’। এমনকি ১০০ দিনের কাজের টাকা এখনও কেন্দ্র সম্পূর্ণ দেয়নি বলে অভিযোগ করেন মুখ্যমন্ত্রী।
রাজ্যে পালা বদলের পর থেকেই গঙ্গাসাগরকে নতুন চেহারায় সাজানো হয়েছে বলে এদিন দাবি করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ জানান, গঙ্গাসাগরে পুণ্যার্থী এবং পর্যটকদের থাকার জায়গা, রাস্তা, ঘাট, যোগাযোগের উন্নতি, অপ্রিতীকর ঘটনা এড়াতে নতুন থানা করা হয়েছে। ফলে সাগরে এখন শুধু মেলার সময়ই নয়, অন্যান্য সময়েও পর্যটকদের আনাগোনা বেড়েছে’।
গঙ্গাসাগর মেলায় মানুষকে অক্লান্ত পরিষেবা দেওয়ার জন্য ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘ, রামকৃষ্ণ মিশনের ভূয়সী প্রশংসা করেন মুখ্যমন্ত্রী। প্রায় ৫০০০ মানুষের হাতে বিভিন্ন পরিষেবা তুলে দেওয়া হয়।