ব্যক্তিগত কম্পিউটার ও মোবাইলে নজরদারির কেন্দ্রীয় নির্দেশিকা নিয়ে আলোচনা করতে চেয়ে এবার রাজ্যসভায় নোটিস দিল তৃণমূল।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এমন তুঘলকি নির্দেশিকা জারি হতেই দেশ জুড়ে শুরু হয়েছে বিতর্ক। প্রথমেই আপত্তি জানিয়েছেন বাংলার মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেশের বুদ্ধিজীবীরাও এমন নির্দেশিকার বিরুদ্ধে সরব হয়েছেন। এবার এই বিতর্ক সংসদে পৌঁছল। সংসদে শীতকালীন অধিবেশন শুরু হওয়ার পর থেকেই এই ইস্যুতে সরকারকে চেপে ধরেছে বিরোধীরা। তবে কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি, নতুন করে কোনও কিছু করা হয়নি। নাগরিকদের কম্পিউটার এবং মোবাইলের তথ্য নজরদারি চালানোর ব্যাপারে তৎপরতা শুরু হয়েছিল আগেই।
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি বরাষ্ট্রমন্ত্রকের একটি নির্দেশিকা অনুযায়ী এখন থেকে ১০টি তদন্ত সংস্থা দেশের যে কোনও কম্পিউটারের ওপর নজরদারি করতে পারবে। সিবিআই থেকে শুরু করে আইবি বা এনআইএ’র মতো দশটি সংস্থা এই নজরদারি চালাতে পারবে। একই ক্ষমতা থাকবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের অধীনে থাকা দিল্লি পুলিসের কমিশনারের হাতেও। কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের এই সিদ্ধান্তকে কেন্দ্র করে সরগরম হয়ে উঠেছে জাতীয় রাজনীতি। বিরোধীদের দাবি, এই ধরনের পদক্ষেপ করে কেন্দ্রীয় সরকার দেশের নাগরিকদের ওপর নজরদারি চালাতে চাইছে।
যদিও সরকারের তরফে অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলি সাফাই দিয়ে বলেন, ‘কংগ্রেস নেতৃত্বাধীন ইউপিএ সরকারের তৈরি করা আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা হয়েছে। এর আগে ফোনের ওপর নজরদারি করতে পারত স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক। কিন্তু এখন আইবি থেকে শুরু করে আরও কয়েকটি তদন্ত সংস্থার ক্ষমতা বাড়ানো হল। তার মধ্যে ‘র’–এর মতো সংগঠনও আছে’।
নজরদারি প্রসঙ্গে সরকার যাই বলুক, ইতিমধ্যেই তদন্তকারী সংস্থাগুলোকে অবাধে নাগরিকদের মোবাইল এবং কম্পিউটারে নজরদারি চালানোর বিরুদ্ধে জনস্বার্থ মামলার আবেদন জমা পড়েছে সুপ্রিম কোর্টে। আবেদনকারী আইনজীবী মনোহরলাল শর্মা। ওই আবেদনে সরকারের নির্দেশকে ‘অনৈতিক ও অসাংবিধানিক’ বলেছেন তিনি। আবেদনকারীর দাবি, রাজনৈতিক বিরোধী, বিরোধী মনোভাবের বিদ্বজ্জনদের খুঁজে বের করতেই এই সরকারি বিজ্ঞপ্তি জারি হয়েছে, যাতে দেশে একচ্ছত্র শাসন চালানো যায়।