সুন্দরবনের প্রত্যন্ত দ্বীপের মহিলাদের স্বনির্ভর করার লক্ষ্যে বেশ কয়েক বছর আগে গঠিত হয়েছিল সুন্দরবন মিল্ক কো-অপারেটিভ। ২০১৫ সালে মুখ্যমন্ত্রী তার নামকরণ করেন সুন্দরিনী ন্যাচরালস। দেশি গোরুর দুধ ছাড়াও তাদের উৎপাদিত ঘি এবং মধু ইতিমধ্যেই যথেষ্ট সুনাম কুড়িয়েছে। সেখান থেকে আরও এক ধাপ এগিয়ে এ বার মিষ্টির বাজারেও আসছে তারা।
কয়েক মাস আগেই দেশি গোরুর খাঁটি দুধ উৎপাদন করে গুজরাট থেকে সেরার মুকুট ছিনিয়ে এনেছিল রাজ্যের দুগ্ধ সমবায় ‘সুন্দরিনী’। সেই সাফল্যকে হাতিয়ার করে এ বার মিষ্টির বাজার দখল করতে ঝাঁপাচ্ছে তারা। এ ক্ষেত্রে তাদের ভরসা খাঁটি গোরুর দুধে তৈরি বিশুদ্ধ মিষ্টি।
এই প্রকল্পের সঙ্গে যুক্ত সরকারি আধিকারিকরা জানিয়েছেন, সুন্দরিনী ব্র্যান্ডের মোট ৫০ ধরনের মিষ্টি বাজারে আনা হবে। প্রাথমিক ভাবে প্রাণিসম্পদ দপ্তরের পরিচালনাধীন হরিনঘাটা মিট এবং সমবায়িকার স্টল থেকে এই মিষ্টি কিনতে পাওয়া যাবে। আলিপুরে জেলাশাসকের অফিস চত্বরে সুন্দরিনীর যে নিজস্ব স্টল রয়েছে, সেখানেও এই মিষ্টি পাওয়া যাবে। অদূর ভবিষ্যতে সুন্দরিনী নামে রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্তে মিষ্টির আউটলেট খোলা হবে। তার জন্য কাগজে বিজ্ঞাপন দিয়ে ফ্র্যাঞ্চাইজিও খোঁজা হবে। এতে কয়েক হাজার মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলেও দাবি সরকারি কর্তাদের। সুন্দরিনী-র মিষ্টির বৈশিষ্ট্যগুলি হল, সমস্ত মিষ্টি খাঁটি গোরু দুধে তৈরি, সালফার মুক্ত চিনির ব্যবহার, কেমিক্যালের বদলে অর্গানিক রং-এর ব্যবহার, মিষ্টির ন্যাচারাল ফ্লেভার এবং মিষ্টি মজুতে কোনও রাসায়নিক নেই।
সংস্থার ম্যানেজিং ডিরেক্টর অম্বিকাপ্রসাদ মিশ্র আশ্বাস দিয়েছেন, ‘সুন্দরিনীর মিষ্টি খাঁটি গোরুর দুধে তৈরি হলেও তার দাম মধ্যবিত্তের নাগালের মধ্যেই থাকবে। ১০-৩০ টাকা দামে এই মিষ্টি পাওয়া যাবে।’ নবান্ন সূত্রের খবর, দু’এক দিনের মধ্যেই বাজারে আসতে চলেছে এই মিষ্টি। তার আগে সেই মিষ্টির গুণাগুণ যাচাইয়ের জন্য মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে নমুনা পাঠানো হয়েছে। প্রশাসনিক বৈঠক এবং গঙ্গাসাগর মেলা পরিদর্শনের জন্য মুখ্যমন্ত্রী বর্তমানে গঙ্গাসাগরে রয়েছেন। বৃহস্পতিবার প্যাকেট বন্দি করে মুখ্যমন্ত্রীর কাছে মোট ৩২ ধরনের মিষ্টির নমুনা পাঠানো হয়েছে। তার মধ্যে রয়েছে সীতাভোগ, কেসর চমচম, মনোহরা, লালমোহন, ইলাচি পেঁড়া, ভাপা সন্দেশ, মাধুরী এবং বেকড সন্দেশ। মুখ্যমন্ত্রীর সবুজ সঙ্কেত মিললেই বাজারে আসতে শুরু করবে সুন্দরিনী ব্র্যান্ডের মিষ্টি। যার নামকরণ করেছেন স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই।