হিন্দু ছাড়া প্রবেশাধিকার নেই আর কারও। কিন্তু সেই বিধিনিষেধ সত্ত্বেও মন্দিরে ঢুকেছেন অন্য ধর্মের লোক। এই ঘটনা সামনে আসার পরই বিক্ষোভের জেরে শুক্রবার সারাদিন বন্ধ রইলো পুরীর জগন্নাথ দেবের মন্দিরের দরজা। এমনকি রাতভর ভোগ পেলেন না জগন্নাথ দেব স্বয়ং! পাশাপাশি দেব দর্শনেও বঞ্চিত হলেন হাজার হাজার পুণ্যার্থী।
সমস্যার সূত্রপাত বৃহস্পতিবার বিকেলে। মন্দিরের অন্যতম প্রধান সেবায়েত সেবায়েত ভবানী শঙ্কর মহাপাত্র ৩ পুণ্যার্থীকে নিয়ে মন্দিরে প্রবেশ করেন। অভিযোগ, এই ৩ পুণ্যার্থী নাকি হিন্দু ছিলেন না। সন্দেহ হওয়ায় ভবানী শঙ্কর এবং ওই তিনজনের পথ আটকায় পুলিশ। এরপরেই পুলিশের সঙ্গে ঝামেলা বাধে সেবায়েত ভবানীর।
ভবানীর দাবি, ওই পুণ্যার্থীরা সকলেই হিন্দু। এ কথা বারবার পুলিশকে বলার পরেও কোনও কথা কানে নেয়নি তারা। উল্টে ওই পুণ্যার্থীরা বিদেশিনী অভিযোগে তাঁদের সঙ্গে চরম দুর্ব্যবহার করে পুলিশকর্মীরা। এমনকি ভবানী-সহ ওই ৩ পুণ্যার্থীকে আটকও করা হয়।
এরপরেই বিক্ষোভে নামে পুরী মন্দিরের সেবায়েত সংগঠন। ক্রমশই চড়তে থাকে অশান্তির পারদ। শেষে একপ্রকার বাধ্য হয়েই মন্দিরের দরজা বন্ধ করে দেয় জগন্নাথ ধাম কর্তৃপক্ষ। শুক্রবারও খোলা হয়নি মন্দির। ফলে জগন্নাথ দেবের দর্শন না করে খালি হাতেই ফিরতে হয়েছে পুণ্যার্থীদের। জানা গিয়েছে, গোটা ঘটনায় পুলিশ এবং মন্দিরের সেবায়েত সম্প্রদায়, দু’পক্ষই পরস্পরের বিরুদ্ধে এফআইআর দায়ের করেছে।
মন্দিরে এ হেন অচলাবস্থার পরে বৃহস্পতিবার রাত থেকেই দফায় দফায় মন্দিরের পরিচালন সমিতি এবং মন্দিরের সেবায়েত সংগঠনের সঙ্গে বৈঠকে বসেন পুরীর কালেক্টর জ্যোতিপ্রকাশ দাস। কিন্তু শুক্রবার বেলা পর্যন্ত কোনও সমাধান সূত্র পাওয়া যায়নি। সেবায়েত সংগঠনের দাবি, পুলিশের এই আচরণের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। তাদের দাবি না মানা হলে মন্দিরের দরজা খোলা হবে না বলে সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা।
রীতি ভেঙেই বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত বন্ধ থাকল জগন্নাথদেবের পুজো অর্চনা। এমনকি ভোগ নিবেদনও। প্রসঙ্গত, আদালতের নির্দেশে পান্ডারাজ বন্ধ হয়ে যাওয়ায় পুলিশের সঙ্গে পান্ডাদের ঠান্ডা লড়াই-ই ঘনঘন মন্দিরে অশান্তির কারণ বলে মনে করেছেন অনেকে। কারণ মাস কয়েক আগেও দু’দিনের জন্য বন্ধ ছিল পুরী মন্দিরের দরজা। স্বাভাবিকভাবেই গোটা দিন জগন্নাথ দর্শন থেকে বঞ্চিত হয়ে ক্ষোভে ফুটছেন দেব-দর্শনে আসা পুণ্যার্থীরা।