সামনে লোকসভা নির্বাচন। এদিকে পাঁচ রাজ্যে ভরাডুবির পর বিজেপির বেহাল দশা। শরিকেরা তোপ দাগছে। কেউ কেউ জোট ছাড়ছে। আরএসএস-এর সঙ্গে মতবিরোধ হচ্ছে। সব মিলিয়ে রাজনীতির ম্যদান থেকে ফিকে হয়ে যাচ্ছে বিজেপি। এমন পরিস্থিতিতে ভোটের ময়দানে ফের নিজেদের প্রাসঙ্গিক করে তুলতে রাম মন্দিরের দ্বারস্থ হচ্ছে তারা। আর সেই কারণেই, অযোধ্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তি করতে সুপ্রিম কোর্টকে আবেদন জানিয়েছেন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ।
লখনৌতে অখিল ভারতীয় অধিভক্ত পরিষদের একটি সম্মেলনে এই কথা জানান রবিশঙ্কর প্রসাদ। তিনি বলেন, ‘৭০ বছর ধরে কেন আইনি জটিলতায় আটকে আছে রামজন্মভূমি নির্মাণের বিষয়টি?আমরা কেন বাবরকে পুজো করব?ভারতীয় সংবিধানে রাম, কৃষ্ণ এমনকি আকবরের কথা বলা থাকলেও বাবরের কোনও প্রসঙ্গ নেই। আমাদের দেশে এই কথাগুলো বললেই বিতর্ক শুরু হয়ে যায়’। তাঁর প্রশ্ন, ‘শবরীমালা মন্দিরের ক্ষেত্রে চটজলদি সিদ্ধান্ত নেওয়া সম্ভব হলে, অযোধ্যা মামলায় দেরি হচ্ছে কেন’?
ইতিমধ্যে মন্দির নির্মান কমিটি হুঁশিয়ারি দিয়েছে, রাম মন্দির নির্মান হলে তবেই ভোট হবে। গত কাল উত্তরপ্রদেশের এক অনুষ্ঠানে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বক্তব্যের মাঝখানেই রাম মন্দির নিয়ে স্লোগান ওঠে। যার জেরে বক্তব্য থামিয়ে দিতে হয় রাজনাথ সিংকে। এদিকে সরকারে আসার পর চার বছর কেটে গেলেও মন্দির তৈরিতে এখনও পর্যন্ত এক পাও এগোতে পারেনি গেরুয়া ব্রিগেড।কেন্দ্রে মোদী এবং রাজ্যে যোগী এই মেলবন্ধনেও মন্দির তৈরিতে বিজেপির ব্যর্থতা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে খোদ গেরুয়া শিবিরের মধ্যেই। সেই ব্যর্থতা ঢেকে ২০১৯ লোকসভা নির্বাচনের বৈতরণী পেরোতে ফের মন্দির আন্দোলনেই ফিরতে চাইছে বিজেপি।
প্রসঙ্গত, আগামী ৪ জানুয়ারি সুপ্রিম কোর্টে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ এবং বিচারপতি এস কে কউলের বেঞ্চে উঠবে এই মামলা। রাম জন্মভূমি-বাবরি মসজিদ মামলার শুনানি। ২০১০ সালে ইলাহাবাদ হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের প্রেক্ষিতেই এই শুনানি হবে। ইলাহাবাদ হাইকোর্টের রায় ছিল বিতর্কিত এলাকার ২.৭৭ একর জমি সমান ভাবে ভাগ করে দেওয়া হবে নির্মোহী আখড়া, সুন্নি ওয়াকফ বোর্ড এবং রাম লালা, এই তিনটি পক্ষের মধ্যে।
এদিনের অনুষ্ঠানে আইনমন্ত্রী ছাড়াও সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি এমআর শাহ, এলাহাবাদ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি গোবিন্দ মাথুর প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।