লন্ডনের কোম্পানি বেদান্ত রিসোর্সের স্মেলন্টিং কোম্পানি স্টারলাইট কপারের বিরুদ্ধে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগে দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ চলছিল তামিলনাড়ুর থুট্টুকুড়ি জেলায়। গত ২২ মে কারখানার সামনে যখন বিক্ষোভ দেখান হচ্ছিল, ঠিক তখনই বিক্ষোভকারীদের মাথায়, বুকে গুলি চালায় পুলিশ। যার ফলে মৃত্যু হয় মোট ১৩ জনের।
এবার বিভিন্ন সরকারি হাসপাতালের ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের নিয়ে তৈরি অটোপসি রিপোর্টেও এই তথ্য উঠে এসেছে যে, ওই ১৩ জন বিক্ষোভকারীর মৃত্যুর জন্য দায়ী পুলিশের গুলিই। জানা গেছে, সর্বকনিষ্ঠ বিক্ষোভকারী ১৭ বছরের কিশোরী জে স্নোলিনের মাথার পিছন থেকে গুলি ঢুকে তার মুখ দিয়ে ছিটকে বেরিয়েছিল। এ কথাও উল্লেখ করা হয়েছে অটোপসি রিপোর্টে। এছাড়াও অটোপসির রিপোর্ট থেকে জানা গেছে, বেশিরভাগ মৃতেরই মাথার পাশে বা শরীরের পিছন দিকে গুলি করা হয়েছিল। দুজনের মাথার একপাশের খুলি উড়ে গিয়েছিল গুলিতে।
প্রসঙ্গত, ওই কোম্পানির বিরুদ্ধে পারিপার্শ্বিক পরিবেশে দূষণ ছড়ানোর অভিযোগ এসে আদালতের দ্বারস্থও হয়েছিলেন বিক্ষোভকারীরা। গত মে মাসে তাঁদের বিক্ষোভ আরও চরম আকার নিলে, একদল বিক্ষোভকারী কারখানার মূল গেটের সামনেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করে দেয়। ফলে দ্রুত তাঁদের হঠাতে গুলি চালাতে শুরু করে পুলিশ। এর জেরে ঘটনাস্থলেই মৃত্যু হয়ে ১৩ জনের।
এই ঘটনার খবর চাউর হতেই ঘটনায় তীব্র প্রতিবাদ শুরু হয়ে যায় রাজ্যজুড়ে। তদন্তে নেমে সিবিআই জানতে পারে, পুলিশের ৪ শীর্ষ আধিকারিক এবং ২ সরকারি অফিসার উপস্থিত ছিলেন ঘটনাস্থলে। কিন্তু তা সত্বেও কোনও পুলিশ অফিসারকেই গ্রেফতার করা হয়নি। থুট্টুকুড়ি জেলা প্রশাসনও সাফাই গেয়ে বলে, জনতা ক্রমশ মারমুখী হয়ে ওঠায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বাধ্য হয়ে ৬৯টি তাজা কার্তুজ ব্যবহার করেছিল পুলিশ। তিনটি এসএলআর থেকে ৩০ রাউন্ড, .৩০৩ রাইফেল থেকে চার রাউন্ড এবং .৪১০ আগ্নেয়াস্ত্র থেকে ১২ রাউন্ড অতিরিক্ত গুলি চালানো হয়েছিল।
তবে শনিবারের অটোপসি রিপোর্ট মেলার পর সিবিআই বা থুট্টুকুড়ি জেলা প্রশাসনের তরফে কোনও প্রতিক্রিয়া জানানো হয়নি।