দু’দিনের রাজ্য কমিটির বৈঠক শেষেও কংগ্রেস প্রশ্নে কোনও স্থায়ী সমাধান সূত্র বের করতে পারল না সিপিএম। মুজফফর আহমদ ভবন সূত্রে খবর, রাজ্য কমিটির তরফে বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে জানুয়ারি মাসের প্রথম সপ্তাহের মধ্যে লোকসভা নির্বাচনী কৌশল প্রসঙ্গে বিশেষ করে কংগ্রেস প্রশ্নে সিপিএমের অবস্থান কি হবে তা স্থির করে ফেলতে হবে। সেই কারণে প্রতিটি জেলা কমিটিকে এই জেলার রাজনৈতিক মানচিত্র খতিয়ে দেখে কংগ্রেসের সঙ্গে জোটে যাওয়া ঠিক হবে কি না সে বিষয়ে আলিমুদ্দিনের কাছে রিপোর্ট পাঠাতে বলা হয়েছে। সেই রিপোর্টের নতুন বছৱে দিল্লিতে কেন্দ্রীয় কমিটির বৈঠকের আগে এ কে গােপালন ভবনে পাঠিয়ে দেওয়া হবে। তারপরই জোট নিয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত হবে। পাশাপাশি বৈঠকে এও নাকি আলােচনা হয়েছে বর্তমানে রাজ্যের বিভিন্ন জেলায় বিভিন্ন জায়গায় সিপিএম ভোট ১৫ শতাংশে গিয়ে ঠেকেছে। সেইসব অঞ্চলগুলিতে পুরনাে ভােটব্যাঙ্ক ফিরিয়ে আনা কার্যত সম্ভব নয় বলেই জেলার নেতারা জানিয়ে দিয়েছেন। সে ক্ষেত্রে এইরকম করুণ চিত্র নিয়ে লােকসভায় লড়াই করা যে কতটা চাপের তা বুঝতে পারছেন নেতারা। সূত্রের দাবি, দলের রাজ্যসম্পাদক সূর্যকান্ত মিশ্র তার ভাষণে বলেন বিভিন্ন সভা সমিতিতে ভিড় হচ্ছে অথচ বুথে যাওয়ার লোক পাওয়া যাচ্ছে তা করলে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করা সম্ভব নয়।
এদিকে জোট প্রসঙ্গে একজন সিপিএম নেতা জানান, আমাদের পরিকল্পনা ছিল লােকসভা নির্বাচনের অন্তত পাঁচ-ছয় মাস আগে যদি কংগ্রেসের সঙ্গে জোট হয় সেটা চূড়ান্ত করে ফেলা। তা হলে কেন জোট করা হচ্ছে সেটা মানুষকে বুঝানোর সময় পাওয়া যেত। পাশাপাশি দলীয় কর্মীরা জোটবদ্ধভাবে প্রচারের সুযোগ পেত। কারণ যতই কংগ্রেসের প্রসঙ্গে আমাদের বর্তমানে নরম মনােভাব থাকুক না কেন, আদতে ওটা একটা দক্ষিণপন্থী দল। সে কারণে বামপন্থী দলের কর্মীদের মানিয়ে নিতে একটু সময় তো লাগবেই। কিন্তু মনে হচ্ছে মার্চ মাসেই নির্বাচনের বিজ্ঞপ্তি জারি হয়ে যাবে। তাই হাতে আর বেশি সময় না থাকায় জানুয়ারিতেই সবকিছু চূড়ান্ত করে ময়দানে নেমে পড়তে হবে। তবে সিপিএমের একটা সূত্রের দাবি, কংগ্রেসের হাত ধরা নিয়ে দলের বেশিরভাগ জেলা একমত হলেও চাপে রেখেছে বামফ্রন্টের অন্যান্য শরিক দলগুলো। ইতিমধ্যেই ফরওয়ার্ড ব্লক ও আরএসপি কংগ্রেসের সঙ্গে জোটের বিরোধিতা করেছে। সিবিআই স্পষ্টভাবে জানিয়ে দেবে জোট নিয়ে আগে ফ্রন্টে আলােচনা করেই সিদ্ধান্ত নিতে হবে। এর পাশপাশি দুদিনের বৈঠকে ব্রিগেড ও ৮, ৯ জানুয়ারি ধর্মঘট নিয়ে আলোচনা হয়।